নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে ছাড় পেল ৮ ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক
শেয়ারবাজারে নিজেরা বিনিয়োগ করে ও বিনিয়োগকারীদের ঋণ দিয়ে ক্ষতির মুখে পড়া আটটি ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংককে বিশেষ ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ সুবিধা দিয়েছে। এই সুবিধার ফলে এসব প্রতিষ্ঠান তাদের আর্থিক ক্ষতি ও লোকসানের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ বা প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রে কয়েক বছর সময় পাবে।
বিএসইসির আজ মঙ্গলবারের কমিশন সভায় এসব প্রতিষ্ঠানকে নিরাপত্তার সঞ্চিতির ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যেসব ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক এই সুবিধা পেয়েছে সেগুলো হলো সিটি ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিটি ব্রোকারেজ, ওয়ান সিকিউরিটিজ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক সিকিউরিটিজ, বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ, আইএফআইসি সিকিউরিটিজ, এপেক্স ইনভেস্টমেন্টস, আবাসি ইনভেস্টমেন্টস ও সোনালী ইনভেস্টমেন্ট।
বিএসইসি জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনুমোদন ও এ-সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করার পর আর্থিক ক্ষতির বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে বাড়তি সময় চেয়ে কমিশনের আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে কমিশনের এ-সংক্রান্ত আদেশ মেনে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধস ও তারপর দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারবাজারে মন্দাভাব থাকায় অনেক ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের বিপরীতে যে ঋণ দিয়েছিল, তার বড় অংশই আদায় করতে পারছে না। তাতে ঋণদাতা অনেক প্রতিষ্ঠানে বড় অঙ্কের ঋণাত্মক মূলধন বা নেগেটিভ ইক্যুইটি তৈরি হয়। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরা বিনিয়োগ করেও বড় অঙ্কের লোকসানে পড়েছে। তাতে এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সক্ষমতা অনেকাংশে হ্রাস পায়। নিয়ম অনুযায়ী, অনাদায়ি ঋণ ও লোকসানের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হয়। এই বিধান পরিপালন করতে গেলে বেশির ভাগ ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক আর্থিক সংকটে পড়বে। এমনকি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সক্ষমতাও হারাবে অনেক প্রতিষ্ঠান। এ কারণে ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসের পর থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে আসছে বিএসইসি।
বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব প্রতিষ্ঠানকে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ক্ষেত্রে আর ঢালাও সুবিধা না দিয়ে কেইস টু কেইস ভিত্তিতে এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি এসব অনাদায়ি ঋণ ও অবিক্রীত শেয়ারের বিপরীতে লোকসান সমন্বয়ে বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পর্ষদ সভায় অনুমোদনের আদেশ দেয় বিএসইসি। ওই কর্মপরিকল্পনার ভিত্তিতে সংকটে থাকা ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংককে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে সময় দিচ্ছে বিএসইসি।