হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে মিউচুয়াল ফান্ড

শেয়ারবাজারগ্রাফিকস: প্রথম আলো

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের দাপট দেখা গেছে। সপ্তাহ শেষে এই বাজারে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ তিন প্রতিষ্ঠানই ছিল মিউচুয়াল ফান্ড। এগুলো হলো আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি ফান্ড, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ড। গোটা সপ্তাহে এসব ফান্ডের ইউনিটের দাম সর্বনিম্ন সাড়ে ১৬ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সাময়িকভাবে কিছু ফান্ডের ইউনিটের দাম বাড়লেও দীর্ঘ মেয়াদে তা স্থায়ী হয় না। এ ছাড়া মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে নানা কেলেঙ্কারির ঘটনাও রয়েছে। আবার শেয়ারবাজারে একধরনের স্থবিরতা বিরাজ করায় ফান্ডগুলো ভালো মুনাফাও করতে পারছে না। সব মিলিয়ে মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী বলেন, বাজারে যেসব মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে, সেগুলোর বিনিয়োগ নিয়েই বড় ধরনের প্রশ্ন আছে। এসব ফান্ডে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তৈরি হওয়ার যৌক্তিক কোনো কারণও নেই। যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে এসব ফান্ডের ইউনিটের দাম অভিহিত মূল্যের নিচে পড়ে আছে, তাই মন্দা বাজারের সুযোগ নিয়ে কারসাজিকারকেরা এসব ফান্ডের দাম বাড়িয়ে মুনাফা করার চেষ্টা করছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে নিম্নমানের ও বন্ধ কোম্পানির শেয়ারেরই সবচেয়ে বেশি মূল্য বৃদ্ধি ঘটছে। কারসাজির মাধ্যমেই এটি করা হচ্ছে বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারই ধারাবাহিকতায় এখন কারসাজির মাধ্যমে কিছু মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে মনে করেন একাধিক সম্পদ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী।

মূল্যবৃদ্ধিতে মিউচুয়াল ফান্ড এগিয়ে থাকলেও ডিএসইতে এখন লেনদেনে এগিয়ে আছে মূলত মাঝারি মানের কোম্পানিগুলো। ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারের খুব বেশি লেনদেন হচ্ছে না। গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন ছিল মাঝারি মানের তথা ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানিগুলোর। ঢাকার বাজারে গত সপ্তাহে ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেন ছিল ১ হাজার ৯৮ কোটি টাকা। যদিও উভয় ক্ষেত্রেই লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে কমেছে।

ডিএসইতে গত সপ্তাহ শেষে সার্বিক লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে ৫৪ কোটি টাকা বা প্রায় ২ শতাংশ কমে হয়েছে ২ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা।