ছোট বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব নয়: সালমান এফ রহমান

সালমান এফ রহমান
ফাইল ছবি

দেশের শেয়ারবাজারের মৌলিক কাঠামোতেই সমস্যা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেছেন, শেয়ারবাজারের মৌলিক কাঠামোতে সমস্যা রয়েছে। এটির সমাধান করার জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সমস্যাটি হচ্ছে, শেয়ারবাজারের দৈনিক লেনদেনের ৮৫-৯০ শতাংশই করেন ছোট বিনিয়োগকারীরা। আর ৫-১০ শতাংশ লেনদেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের। অথচ অন্যান্য দেশের শেয়ারবাজারে ৮০ শতাংশ বিনিয়োগ হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের।

সালমান এফ রহমান বলেন, প্রায়ই একটা কথা শোনা যায়, ছোট বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে হবে। কিন্তু তাঁদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব নয়। তিনি আরও বলেন, ‘ছোট বিনিয়োগকারীদের উচিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা। আমাদের দেশে যেটি হচ্ছে, ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে বিনিয়োগ করলেও সিদ্ধান্ত আমরাই নিচ্ছি। তারপর যদি আমি ভুল করি, সরকারের দায়িত্ব হবে সেটি পুষিয়ে দেওয়া। ভেরি নাইস। আমাদের এই মানসিকতা থেকে বের হতে হবে।’

গতকাল বুধবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই), দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল ২৪-এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘প্রাক্‌-বাজেট আলোচনা ২০২৩-২৪: বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা। সালমান এফ রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিতে হলে বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন করতে হবে।’ এ জন্য বাজেটে কর অব্যাহতিসহ যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সেগুলো করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, সংসদ সদস্য মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি জসিম উদ্দিন ও সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সামির সাত্তার।

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন হয় না। ব্যাংকিং খাত থেকে ৯৯ শতাংশ দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন হয়। তবে বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন সম্ভব। ভারতে মিউচুয়াল ফান্ডের আকার জিডিপির ৫৫ শতাংশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদ আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করেছে। আবার মিউচুয়াল ফান্ডে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ক্ষেত্রে সুদ আয়ে ৫ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। এমন উদাহরণ থাকলে কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ড খাতটি বড় হবে না। মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠানকে ১০ বছর কর রেয়াত দেওয়ার কথা বলেন আরিফ খান।