তারকা হোটেলের ব্যবসা
ওয়েস্টিন ও শেরাটনের ব্যবসা বেড়েছে
গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ওয়েস্টিন ৪৭ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। একই সময়ে শেরাটন ব্যবসা করেছে ২১ কোটি টাকার।
গুলশানের ওয়েস্টিন ও বনানীর শেরাটন হোটেলের ব্যবসা বেড়েছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ওয়েস্টিন হোটেলের ব্যবসা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। আর বনানীর শেরাটন হোটেলের ব্যবসা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে।
গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ওয়েস্টিন হোটেল ব্যবসা করেছে সোয়া ৪৭ কোটি টাকার। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৩১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ওয়েস্টিনের ব্যবসা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকার বা ৫৪ শতাংশ।
একইভাবে গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বনানীর শেরাটন হোটেল ব্যবসা করেছে সাড়ে ২১ কোটি টাকার। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শেরাটন হোটেলের ব্যবসা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার বা ১১৪ শতাংশ।
ঢাকার গুলশানের ওয়েস্টিন ও বনানীর শেরাটন হোটেলের এ দেশীয় কার্যক্রম পরিচালনা ও মালিকানার সঙ্গে রয়েছে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস। সেই সূত্রে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের আর্থিক প্রতিবেদন থেকে ওয়েস্টিন ও শেরাটনের ব্যবসার এই তথ্য পাওয়া গেছে। এই দুটি তারকা হোটেলের পাশাপাশি ইউনিক হোটেলের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় রয়েছে হানসা নামের আবাসিক হোটেলও। এই তিন হোটেল ব্যবসা মিলে পরিচালিত হয় ইউনিক হোটেলের ব্যবসায়িক কার্যক্রম। পাশাপাশি বেশ কিছু খাতেও কোম্পানিটির বিনিয়োগ রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, গতকাল রোববার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে এ তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে কোম্পানিটি।
ব্যবসা কিছুটা ভালো হয়েছে। তবে গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে; কারণ, গত বছর ব্যবসা খুব খারাপ ছিল।
ইউনিক হোটেলের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়েস্টিন ও শেরাটনের ব্যবসা বৃদ্ধির ফলে ইউনিক হোটেলের সামগ্রিক ব্যবসাও বেড়েছে। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ইউনিক হোটেলের ব্যবসা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ কোটি টাকায়। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৪৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটির ব্যবসা গত বছরের চেয়ে ২৯ কোটি টাকা বা ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। ব্যবসা যতটা বেড়েছে, মুনাফা বেড়েছে তার চেয়েও বেশি। কারণ, বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করা শেয়ার বিক্রি থেকে এই প্রান্তিকে ভালো আয় যোগ হয়েছে কোম্পানিটিতে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ইউনিক হোটেল মুনাফা করেছে ৪০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে চলতি অর্থবছরের একই প্রান্তিকে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ২৭ কোটি টাকা বা প্রায় ২০৮ শতাংশ। চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে হোটেল ব্যবসার বাইরে বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানির শেয়ার বিক্রি বাবদ প্রায় পৌনে ৪ কোটি টাকা বাড়তি আয় যুক্ত হয়েছে, যার কারণে মুনাফা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা ছিল। ওই সময় বিদেশি অতিথি প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিল। সেই কারণে গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যবসা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এ বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে স্বাভাবিক ব্যবসা হয়েছে। তারপরও গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বেশি খারাপ ব্যবসা হওয়ায় এ বছরের একই সময়ের ব্যবসায় অনেক বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
জানতে চাইলে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের ব্যবসা কিছুটা ভালো হয়েছে। তবে গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে; কারণ, গত বছর ব্যবসা খুব খারাপ ছিল। এ ছাড়া চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগ থেকে উল্লেখযোগ্য একটি আয় কোম্পানির হিসাবে যুক্ত হয়েছে। তাতে মুনাফা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।’