নির্বাচনের ফল ঘোষণায় বিলম্বের কারণে পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে বড় পতন

পাকিস্তানে একটি কেন্দ্রে ভোট গণনা চলছেছবি: এএফপি

নির্বাচনের পরদিনই পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন ঘটেছে। পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জের (পিএসএক্স) বেঞ্চমার্ক তথা প্রধান সূচক কেএসই-১০০ আজ শুক্রবার ১ হাজার ৭০০ পয়েন্ট কমেছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় শেয়ারবাজারে ধস নামে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশটির জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা দীর্ঘ বিলম্বের পর শুরু হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার আশঙ্কায় ব্যাপক হারে শেয়ার বিক্রি করে দেন। তাতে শেয়ারের দাম ও সূচক—দুটিই কমে। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের সার্বভৌম বন্ডের দামও পড়ে গেছে।

পাকিস্তানের দ্য ডন পত্রিকা পিএসএক্সের ওয়েবসাইটের বরাতে জানায়, শুক্রবার লেনদেন শুরু হওয়ার পরপরই কেএসই সূচকটি ২ হাজার ২৭৮ পয়েন্ট পড়ে যায়। এরপর তা অবশ্য খানিক ঘুরে দাঁড়ায়। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক ১ হাজার ৭২০ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা বা ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ খুইয়ে ৬২ হাজার ৪২৩ দশমিক ৬০ পয়েন্টে নেমে আসে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই সূচক ছিল ৬৪ হাজার ১৪৩ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট।

টপলাইন সিকিউরিটিজ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, প্রাক্-নির্বাচন সমীক্ষার ভিত্তিতে আশা করা হয়েছিল পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতৃত্বাধীন জোট সরকার গঠনের মতো আসন পাবে। কিন্তু প্রাথমিক অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে সেই সম্ভাবনাকে কঠিন মনে হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েন।

ফার্স্ট ন্যাশনাল ইকুইটির সিইও আলী মালিক বলেন, ‘গতকালের (বৃহস্পতিবার) নির্বাচনের পর বাজার রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল সরকারের প্রত্যাশা করছে। এখন মনে হচ্ছে, অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতে যাচ্ছেন এবং তাঁরাই পরবর্তী সরকার গঠন করতে পারেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরকার গঠন করলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের অনেকে বিভ্রান্তিতে রয়েছেন। সে জন্য তাঁরা আজ শেয়ার কিনতে আগ্রহী হননি, বরং বিক্রি করে দিয়েছেন। অর্থাৎ রাজৈনিতক অনিশ্চয়তার আশঙ্কাই শেয়ারবাজারের পতনের মূল কারণ।’

জেএস গ্লোবালের হেড অব ইকুইটি ফারান রিজভী বলে, ‘রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার’ কারণে বিনিয়োগকারীরা বেশি সতর্কতা অবলম্বন করেছেন।

এই লেখা তৈরি করার সময় পর্যন্ত পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেশটির জাতীয় পরিষদের ১৪৮ আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬১টি আসনে জয়ী হয়েছেন, যার অধিকাংশই ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থিত প্রার্থী। অন্য দলগুলোর মধ্যে নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ (পিএমএল-এন) ৪৩টি, বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়ালের পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৩৮টি, এমকিউএম ৪টি এবং জেইউআই (পি) ও পিএমএল ১টি করে আসনে জয় পেয়েছে।

অন্যদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে ১৩৭টি আসনের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীরা ৫০টি, পিএমএল-এন ৪৪টি ও পিপিপি ৩৫ আসন জয় পেয়েছে। আর ৮টি আসনে অন্য প্রার্থীরা জিতেছেন।