জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারেও

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা লেগেছে শেয়ারবাজারেও। গত শুক্রবার ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রলের দাম বাড়ানোর পর থেকে শেয়ারবাজারে দরপতন শুরু হয়েছে। জ্বালানির দাম বাড়ার পর লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই সূচক ও শেয়ারের দাম কমেছে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গত তিন দিনে ১৩১ পয়েন্ট কমেছে। এর মধ্যে গতকাল বুধবার এক দিনেই কমেছে ৭৮ পয়েন্ট বা সোয়া ১ শতাংশ।

বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসাবায়ন নিয়ে চলে আসা অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই দিন এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। সেখানে বলা হয়, এখন থেকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিটের হিসাব হবে সিকিউরিটিজের বা শেয়ারের ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারধসের আগে থেকে শেয়ারবাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ দাবিতে সোচ্চার ছিলেন। প্রায় এক যুগ পর এসে সেই দাবি বাস্তব রূপ পায়। তার আগে গত ৩১ জুলাই দরপতন ঠেকাতে শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বড় এ দুই সিদ্ধান্তের পর শেয়ারবাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ভেবেছিলেন, মন্দাবাজারে গতি ফিরবে। সেই আশায় ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের সেই আশায় ছাই ছিটিয়ে দিয়েছে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি।

জানতে চাইলে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের অধ্যাপক মোহাম্মদ মুসা বলেন, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার শঙ্কা থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অনেকটাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি বিনিয়োগকারীদের এ ভীতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ, জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে শিল্প খাত থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ—সবার ওপর চাপ তৈরি হবে। শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়বে। এ কারণে শেয়ারবাজারেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৭৯ কোম্পানির মধ্যে ২৭৯টির বা ৭৪ শতাংশেরই দাম কমেছে। দাম বেড়েছে ২৬টির বা ৭ শতাংশের আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৪টির বা ১৯ শতাংশের দাম। পাশাপাশি লেনদেনও আগের দিনের চেয়ে ২৮৪ কোটি টাকা কমে নেমে এসেছে ৭৯৯ কোটি টাকায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্রোকারেজ হাউসের মালিক প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে এখন ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি।