সবচেয়ে বেশি বন্ড কিনল একটি ওষুধ কোম্পানি

দেশের শেয়ারবাজারে প্রথমবারের মতো সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন শুরু হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১১ হাজার ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১ হাজার বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এসব বন্ডের লেনদেন করেছে সিটি ব্রোকারেজ ও লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বন্ডের লেনদেনের ইতিহাসে নাম লেখাল এ দুটি ব্রোকারেজ হাউস।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, দেশের শেয়ারবাজারে সরকারি বন্ডের প্রথম লেনদেনটি করেছে সিটি ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিটি ব্রোকারেজ। গতকাল বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে ডিএসইতে প্রথম তারা এ লেনদেনটি সম্পন্ন করে। সিটি ব্রোকারেজের লেনদেনের চার মিনিট পর দ্বিতীয় লেনদেনটি করে লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা ও চট্টগ্রাম উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে এক হাজার করে বন্ডের লেনদেন করেছে। তবে সিটি ব্রোকারেজ শুধু ঢাকার বাজারে লেনদেন করেছে।

স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, সিটি ব্রোকারেজ গতকাল ঢাকার বাজারে এককভাবে একটি বন্ডের ১০ হাজার ইউনিটের কেনাবেচা করেছে। এসব বন্ড বিক্রি করেছে সিটি ব্যাংক। আর কিনেছে সিটি ব্যাংকেরই সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিটি ব্যাংক ক্যাপিটালের একজন করপোরেট গ্রাহক। দেশের খ্যাতনামা একটি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থে এ বন্ডে বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটি। সিটি ব্যাংকের কাছ থেকে যে বন্ড কিনেছে, সেটি ১৫ বছর মেয়াদি। বন্ডটির কুপণ বা সুদহার ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। সিটি ব্যাংকের কাছ থেকে এ বন্ডের প্রতিটি ইউনিট কিনেছে ৭৯ টাকা ৯২ পয়সায়।

অন্যদিকে লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ গতকাল দুই স্টক এক্সচেঞ্জে একটি বন্ডের এক হাজার করে দুই হাজার ইউনিটের লেনদেন করেছে। এসব বন্ড বিক্রি করেছে লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স। আর কিনেছে লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ। প্রতিষ্ঠানটি যে বন্ড কিনেছে সেটি পাঁচ বছর মেয়াদি। কুপণ বা সুদহার ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ। লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ বন্ডের প্রতিটি ইউনিট ১০৫ টাকা ১৯ পয়সায় কিনেছে।

নিয়ম অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠান এক লাখ টাকার কম অর্থের বন্ড কিনতে পারে না। এ কারণে ১০০ টাকা অভিহিত মূল্য একটি বন্ডে সর্বনিম্ন এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হলে কিনতে হয় এক হাজার ইউনিট। বন্ড বাজারকে জনপ্রিয় করতে শেয়ারবাজারে বন্ডের লেনদেন চালুর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তারই অংশ হিসেবে গত সোমবার থেকে শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজ বা ট্রেজারে বন্ডের পরীক্ষামূলক লেনদেন চালু করা হয়। তবে লেনদেন শুরুর প্রথম দিনে কোনো বন্ডের লেনদেন হয়নি।

বর্তমানে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ২৫০টি সরকারি ট্রেজারি বন্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে। এগুলোর মেয়াদ সর্বনিম্ন ২ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২০ বছর।