এক বছরে শেয়ারের দাম বেড়ে তিন গুণ, তদন্তে কমিটি
এক বছরে জেমিনি সি ফুডের দাম বেড়ে প্রায় তিন গুণ হয়ে গেছে। গত বছরের ২৬ অক্টোবর কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১৮২ টাকা। গতকাল দিন শেষে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ৪৯৭ টাকা ৫০ পয়সা। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য ও লেনদেন বৃদ্ধিকে ‘অস্বাভাবিক’ মনে করছে। এ কারণে এমন মূল্যবৃদ্ধির কারণ খুঁজে বের করতে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
আজ মঙ্গলবার বিএসইসির পক্ষ থেকে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয়েছে সংস্থাটির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রাকিবুর রহমানকে। আর সদস্য করা হয়েছে সহকারী পরিচালক ফয়সাল ইসলামকে। কমিটিকে ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিতে বলা হয়।
তদন্ত কমিটিকে চারটি বিষয় খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। তার মধ্যে রয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত কোম্পানিটির নিরীক্ষিত ও অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা; মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বাজারে কোনো ধরনের কারসাজির ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা; কোনো ধরনের সুবিধাভোগী লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খুঁজে দেখা ও অন্যান্য যেকোনো ধরনের কারসাজির ঘটনা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে গত জুলাই থেকে কোম্পানিটির শেয়ারের দামের অস্বাভাবিক উত্থান হয়। গত ২৮ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৩০৬ টাকা। একটানা বেড়ে তা ১৯ অক্টোবর দাঁড়ায় ৫৯৩ টাকায়। এরপর তিন দিন দরপতন হয়। তাতে বর্তমানে এটির বাজারমূল্য কমে ৫০০ টাকার নিচে নেমেছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০ অক্টোবর কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরের জন্য লভ্যাংশের ঘোষণা প্রচার করে ডিএসইর ওয়েবসাইটে। গত বছরের জন্য কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ ও ৩০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এ ছাড়া বছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ছিল ১২ টাকা ৪৯ পয়সা। আগের বছর ইপিএস ছিল মাত্র ৭২ পয়সা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা মুনাফা বেড়েছে প্রায় ১২ টাকা।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধারণা করছেন, মুনাফা ও লভ্যাংশের খবর আগেভাগে জেনে কারসাজিকারকেরা কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটিয়েছেন। মূল্যবৃদ্ধির শুরুতে বিএসইসি তদন্তের উদ্যোগ নিলে এভাবে দাম বাড়ত না।