গ্রামীণফোনের চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা, সব মিলিয়ে ৩৩০ শতাংশ

গ্রামীণফোন

শেয়ারহোল্ডারদের জন্য চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে গ্রামীণফোন লিমিটেড (জিপি)। কোম্পানিটি ১৭০ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে। এর পুরোটাই দেওয়া হবে নগদ লভ্যাংশ।

এর আগে গত বছরের ১৬ জুলাই গ্রামীণফোন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৬০ শতাংশ অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। সেই লভ্যাংশ ইতিমধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। তার সঙ্গে চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করে বিদায়ী অর্থবছরের জন্য মোট ৩৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে গ্রামীণফোন। ২০২৪ সালে কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছে ১২২ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তার ভিত্তিতে লভ্যাংশ ঘোষণাসংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ঘোষণা অনুসারে, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরে গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৬ টাকা ৮৯ পয়সা, এর আগের হিসাববছরে যা হয়েছিল ২৪ টাকা ৪৯ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৪৭ টাকা ৯৫ পয়সা।

আগামী ২৩ এপ্রিল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ ফেব্রুয়ারি।

গত এক বছরে গ্রামীণফোনের শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৩৮৭ টাকা ও সর্বনিম্ন দাম ছিল ২২১ টাকা। আজ লভ্যাংশ ঘোষণার পর লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দামের সীমা থাকবে না।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গ্রামীণ ফোনের শেয়ারের দাম টানা কয়েকদিন বৃদ্ধি পায়। আট দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য বাড়ে প্রায় ১৩০ টাকা বা ৫৩ শতাংশ। তাতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম চলে যায় প্রায় তিন বছর আগের অবস্থানে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গ্রামীণফোনের ওপর বিশেষ নিরীক্ষা চালানো হয়। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ের জন্য গ্রামীণফোনের ওপর চালানো বিশেষ নিরীক্ষার পর কোম্পানিটির কাছ থেকে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা বকেয়া দাবি করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পরে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতের নির্দেশে গ্রামীণফোনকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থও পরিশোধ করতে হয়েছিল।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নানা ধরনের বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছিল দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটরটিকে। তাতে এটির ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হয়। সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কারণে কোম্পানিটির শেয়ারের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন বিনিয়োগকারীরা; কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে উঠে এসেছে কোম্পানিটি।

গ্রামীণফোন মূলত নগদ লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। ২০২৩ সালে ১২৫ শতাংশ, ২০২২ সালে ২২০ শতাংশ, ২০২১ সালে ২৫০ শতাংশ ও ২০২০ সালে ২৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল গ্রামীণফোন।