বড় পতনে ক্রেতাশূন্য বেশির ভাগ শেয়ার

দেশের শেয়ারবাজারে আবারও বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। তাতে গতকাল সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। বড় ধরনের দরপতনের ফলে আতঙ্কিত হয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেড়ে যায়। তবে বেশির ভাগ শেয়ারের ক্রেতা কম থাকায় অনেকে শেয়ার বিক্রি করতে চেয়েও শেষ পর্যন্ত পারেননি।

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল এক দিনেই ৮৭ পয়েন্ট বা দেড় শতাংশ কমে গেছে। তাতে প্রধান এ সূচক কমে দুই মাস আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। গতকাল দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচকটি কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ২১৭ পয়েন্টে। এর আগে সর্বশেষ গত ২৫ মে এ সূচক ৬ হাজার ১৮৮ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল।

ঢাকার বাজারে গতকাল এতটাই ভয়াবহ দরপতন ঘটেছে যে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ১২টির বা ৩ শতাংশের দাম বেড়েছে। আর দাম কমেছে ৩৫৮টির বা ৯৪ শতাংশের। অপরিবর্তিত ছিল ১২টির দাম।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বলছেন, বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে মন্দাভাব চলছে। বিশেষ করে ঈদের ছুটির পর থেকে প্রতিদিনই একটু একটু করে সূচক কমছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। কয়েক দিনের টানা দরপতনে এমনিতেই বিনিয়োগকারীরা আস্থার সংকটে ভুগছেন। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমসাময়িক অর্থনৈতিক নানা সংকট। সব মিলিয়ে তাই গতকাল বড় ধরনের এ দরপতন হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী প্রথম আলোকে বলেন, মূল্যস্ফীতি, ডলার–সংকট, জ্বালানিসংকটসহ নানা কারণে অর্থনীতিতে একধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। যার কমবেশি প্রভাব শেয়ারবাজারের কোম্পানিগুলোর ওপর পড়ছে। জ্বালানিসংকট মোকাবিলায় ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন আপাতত স্থগিতের সিদ্ধান্তও নিয়েছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। কারণ, যেকোনো অর্থনৈতিক সংকটের তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারে।

বাজারসংশ্লিষ্ট আরেকটি পক্ষ বলছে, বাজারে এখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা খুব বেশি সক্রিয় নন। আবার ডলারের দামের অস্থিরতার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও রয়েছেন শঙ্কায়। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি করছেন বেশি। সব মিলিয়ে বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর একধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে শেয়ারের দাম কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমে গেছে।