সকাল থেকে লেনদেনে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, এক ঘণ্টায় লেনদেন ১০৫ কোটি টাকা

শেয়ারবাজারপ্রতীকী ছবি

গত দুই দিনের বড় দরপতনের পর আজ বুধবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। প্রথম এক ঘণ্টার লেনদেনে প্রধান সূচক ডিএসই এক্স বেড়েছে প্রায় ২৯ পয়েন্ট। লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ শেয়ারেরই মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে; দাম কমেছে হাতেগোনা কিছু শেয়ারের।

বাজার–সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই দিনে বড় ধরনের দরপতনের পর বাজারে যাতে আর বড় দরপতন না ঘটে, সে জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে নানা চেষ্টা করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসকে অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে তাদের দিক থেকে শেয়ার বিক্রির চাপ কম থাকে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি থামাতে নানাভাবে আশ্বস্ত করেছে। এ কারণে শেয়ার বিক্রির চাপ কমে যাওয়ায় আজ দিনের শুরু থেকে সূচকের কিছুটা ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। তবে এই ঊর্ধ্বগতি কতটা স্থায়ী হয়, দিন গড়ালে তা আরও ভালোভাবে বোঝা যাবে। আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৩০ মিনিটের মধ্যে সূচক ৪০ পয়েন্টের ওপরে উঠে গিয়েছিল; এক ঘণ্টা শেষে তা কিছুটা কমে ২৯ পয়েন্ট রয়েছে।

এদিকে আজও সূচকে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি রবি আজিয়াটা। গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারের ফ্লোর প্রাইজ বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তর উঠে যাওয়ার পর ১০ শতাংশ দরপতন হয়েছিল। আজও এই কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বড় মূলধনী কোম্পানি। এই কারণে রবির শেয়ারের দর বৃদ্ধি বা দরপতন সূচকে বড় প্রভাব ফেলে। আজও এই কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে; সূচকেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, লেনদেনে গতি থাকলে বোঝা যাবে, বাজারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারী কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। লেনদেন যত বাড়বে বাজার তত বেশি ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে আসবে।

তবে সূচক বাড়লেও লেনদেনে এর খুব একটা প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। প্রথম এক ঘণ্টায় ডিএসইতে ১০৫ কোটি টাকার মতো লেনদেন হয়েছে; এ সময় লেনদেনের শীর্ষে ছিল ওষুধ, রাসায়নিক, টেলিযোগাযোগ, সিরামিক, প্রকৌশল, বস্ত্র ও ট্যানারি খাতের কোম্পানির শেয়ার।

আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অর্থাৎ প্রথম এক ঘণ্টায় ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রাসায়নিক খাতের কোম্পানি ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের শেয়ার। প্রথম এক ঘণ্টায় কোম্পানিটির প্রায় ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেড। এই কোম্পানির মোট ৬ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ খাতের আরেক কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড; এক ঘণ্টায় এই কোম্পানির প্রায় ৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তিনটি সূচকই নিম্নমুখী ছিল। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৮৪ দশমিক ১৩ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮১৪ পয়েন্টে ও ডিএসই এস ১৭ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে নেমে আসে। এ ছাড়া ডিএস ৩০ সূচক প্রায় ২২ দশমিক ৫১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০ পয়েন্টে নেমে আসে। গতকাল ডিএসইতে প্রায় ৪৬৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়।