৯ মাসে ১৩ কোটি টাকা মুনাফা বাটা শুর, শেষ প্রান্তিকে করেছে লোকসান
জুতা প্রস্তুত ও বাজারজাতকারী বহুজাতিক কোম্পানি বাটা শুর মুনাফা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি–সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকায়। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ১১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বা প্রায় ৪৮ শতাংশ। কোম্পানিটির গত ৯ মাসের ব্যবসাসংক্রান্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে মুনাফা কমে যাওয়ার এ তথ্য পাওয়া গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে আজ বুধবার আর্থিক প্রতিবেদনের এসব তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। একই সভায় ৯ মাসের আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে শেয়ারধারীদের জন্য ১৪৩ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে একজন বিনিয়োগকারী ১৪ টাকা ৩০ পয়সা করে লভ্যাংশ পাবেন। আগামী ১৮ নভেম্বর রেকর্ড তারিখে যাঁদের হাতে কোম্পানিটির শেয়ার থাকবে, তাঁরাই শুধু পাবেন ঘোষিত এ লভ্যাংশ।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসের মধ্যে শেষ তিন মাসে (জুলাই–সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটি প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা লোকসান করেছে। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির লোকসান করেছিল ১৩ কোটি টাকা। গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ছাত্র–জনতার অভুত্থান ঘটে। তাতে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়। এ কারণে ওই তিন মাসে দেশজুড়ে ব্যবসা–বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ফলে গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বাটা শু লোকসান করে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটি ৭০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ব্যবসা করেছিল ৬৯৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে চার কোটি টাকার। কোম্পানির বিক্রি ৪ কোটি টাকা বাড়লেও উৎপাদন খরচ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯ কোটি টাকা বেড়েছে। এ কারণে বেশি ব্যবসা করেও কোম্পানির মুনাফা কমে গেছে। চলতি বছর ৭০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রির বিপরীতে কোম্পানির উৎপাদন খরচ হয়েছে ৩৯৫ কোটি টাকা। আর গত বছর ৬৯৬ কোটি টাকার পণ্য বিক্রির বিপরীতে কোম্পানির উৎপাদন খরচ ছিল ৩৭৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে উৎপাদন খরচ ৫ শতাংশ বেড়েছে। তার বিপরীতের ব্যবসা বেড়েছে আধা শতাংশের কম।
এদিকে বাটা শু ১৪৩ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার জন্য কোম্পানিটিকে এ খাতে বিতরণ করতে হবে সাড়ে ১৯ কোটি টাকার বেশি। যার বড় অংশই পাবেন কোম্পানিটির বিদেশি উদ্যোক্তা–পরিচালকেরা। কারণ, কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৭০ শতাংশই রয়েছে তাঁদের মালিকানায়। বাকি ৩০ শতাংশ রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও এ দেশের ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।