এমারেল্ড অয়েলের পর্ষদও পুনর্গঠন করল বিএসইসি

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য খাতের কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের পুরোনো পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পুরোনো পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি বন্ধ কোম্পানিটিকে সচল করতে নতুন পর্ষদও গঠন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে বিএসইসি।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, এমারেল্ড অয়েলের পুরোনো পর্ষদ ভেঙে পাঁচ স্বতন্ত্র পরিচালকের সমন্বয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। নবনিযুক্ত স্বতন্ত্র পরিচালকেরা হলেন সরকারের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার, সজীব হোসেন ও সন্তোষ কুমার দেব। তাঁদের মধ্য থেকে সরকারের সাবেক সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হককে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে।

বিএসইসির আদেশে আরও বলা হয়েছে, পাঁচ স্বতন্ত্র পরিচালকের বাইরে শেয়ারধারীদের মধ্য থেকে দুজন পরিচালক থাকবেন। যাঁদের হাতে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের ২ শতাংশের বেশি শেয়ার রয়েছে, তাঁরাই কেবল পরিচালক হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন।

২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এমারেল্ড অয়েল চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ২০১৫ সালের পর কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। এ কারণে দুর্বল মানের কোম্পানি হিসেবে এমারেল্ড অয়েলকে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। কোম্পানিটি স্পন্দন নামে ধানের তুষ থেকে উৎপাদিত রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদন ও বাজারজাত করত। কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির দায়ে অভিযুক্ত। বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির দায়ে কোম্পানিটির পরিচালকদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, অনিয়মের মাধ্যমে এমারেল্ড অয়েল বেসিক ব্যাংকের দিলকুশা শাখা থেকে ৭৪ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা নেয়। পরে ওই ঋণ পরিশোধ না করায় কোম্পানিটির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ একাধিক পরিচালক মিলিয়ে মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর পালিয়ে যান কোম্পানির শীর্ষ ব্যক্তিরা। আর তাতে চরম সংকটে পড়ে কোম্পানিটি। একপর্যায়ে কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

এ অবস্থায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কোম্পানিটির পর্ষদ পুনর্গঠন করে এটিকে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির শেয়ারের প্রায় ৭০ শতাংশই রয়েছে ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে ৩০ শতাংশের মতো শেয়ার।