করোনায় বেড়েছে ওষুধ ও ফল আমদানি

করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের ভিটামিনজাতীয় খাদ্যগ্রহণের পরিমাণ বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে বিদেশি ওষুধ সেবনও বাড়িয়ে দিয়েছে করোনা। এ কারণে ওষুধ আমদানি বেড়েছে। পাশাপাশি তাজা ও শুকনা ফলের আমদানিও বেড়েছে।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই-নভেম্বরে শিল্পের সব ধরনের কাঁচামাল ও মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে। ফলে সামগ্রিকভাবে আমদানি কমেছে সাড়ে ৮ শতাংশের বেশি। এই অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে খোলা ঋণপত্র (এলসি) ও তা নিষ্পত্তির সঙ্গে আগের বছরের একই সময়ের আমদানির তুলনা করে এমন চিত্র মিলেছে। এই তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জানা গেছে, এককভাবে ২০২০ সালের নভেম্বরে ৪৮১ কোটি ডলারের পণ্য ও সেবা আমদানি হয়েছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে আমদানি হয় ৪৩৯ কোটি ডলারের। সেই হিসাবে আমদানি বেড়েছে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ। তবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি কমেছে ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে ২ হাজার ১৮৮ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৩৯৯ কোটি ডলার।

২০২০ সালের জুলাই-নভেম্বরে ওষুধ আমদানির জন্য ৫ কোটি ডলারের ঋণপত্র খোলা হয়। আগের বছরের একই সময়ে খোলা হয়েছিল ৩ কোটি ডলারের ঋণপত্র। এ ক্ষেত্রে ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে ৬৪ শতাংশ। একই সঙ্গে এলসি নিষ্পত্তির বাড়ে প্রায় ৩৪ শতাংশ। তবে একই সময়ে ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে ঋণপত্র খোলা কমেছে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ।

আলোচ্য সময়ে তাজা ও শুকনা ফল আমদানিতে এলসি খোলা হয় প্রায় ২২ কোটি ডলারের। ২০১৯ সালের একই সময়ে খোলা হয়েছিল ১৭ কোটি ডলারের এলসি। ফলে ফল আমদানিতে এলসি খোলার হার বাড়ে প্রায় ২৫ শতাংশ, নিষ্পত্তিও প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

২০২০ সালের জুলাই-নভেম্বরে পোশাক খাতের কাঁচামাল আমদানিতে ঋণপত্র খোলা হয় ৩৩৪ কোটি ডলারের, ২০১৯ সালের একই সময়ে যা ছিল ৩৯৮ কোটি ডলার। এ ক্ষেত্রে ঋণপত্র খোলা ১৬ শতাংশ ও নিষ্পত্তি সাড়ে ১৪ শতাংশ কমেছে। আমদানিতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় পোশাক খাতের কাঁচামালে, এরপরই মূলধনি যন্ত্রপাতি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে চাল, পেঁয়াজ, তুলা ও কৃত্রিম তন্তু আমদানিতে ঋণপত্র খোলা বেড়েছে। তবে ঋণপত্র খোলা কমেছে চিনি, দুধজাতীয় খাদ্য, ভোজ্যতেল, কয়লা, সিমেন্ট, পেপার ও পেপার বোর্ড আমদানিতে।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে অর্থনীতিতে যে ক্ষতি হয়েছে, তা সামলাতে সরকার এক লাখ কোটি টাকার বেশি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বড়-ছোট ব্যবসায়ীরা এই প্যাকেজ থেকে কম সুদের ঋণও নিচ্ছেন। তবে কেউ নতুন করে কারখানা স্থাপন করছেন না।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই সময়ে সারা বিশ্বে মানুষের চাহিদা কমে গেছে। এর প্রভাবই পড়েছে আমদানিতে।