ছয় দিনে ৪৫ হাজার বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব খালি
শেয়ারবাজারে মন্দাভাব চলছে। আর তাতে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। মাত্র ৬ কার্যদিবসে প্রায় ৪৫ হাজার বিনিয়োগকারী তাঁদের বিও (বেনিফিশারি ওনার্স) হিসাবে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব সংরক্ষণকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এত কম সময়ে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব খালি করে ফেলা নিয়ে বাজারে নতুন করে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। একাধিক ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, কিছুদিন ধরে বাজারে মন্দাভাব থাকায় অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে চুপচাপ বসে আছেন। এতে বাজারে সক্রিয় বিনিয়োগকারীর চেয়ে নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়ে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে বাজারের সূচক ও লেনদেনে।
সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, ১৫ ডিসেম্বর লেনদেন শেষে শেয়ারবাজারে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ২৪ হাজার ১৩৩টি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ২৭৩টিতে। সেই হিসাবে মাত্র ৬ কার্যদিবসে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ৪৫ হাজার ১৪০টি। অর্থাৎ ৬ কার্যদিবসে ৪৫ হাজার বিও হিসাবে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বাজারে। ফলে এসব হিসাব শেয়ারশূন্য হয়ে গেছে।
জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বাজারে মন্দাভাব থাকায় কিছু কিছু বিনিয়োগকারী তাঁদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে সাইড লাইনে চলে গেছেন। তাঁদের মধ্যে একটি অংশ হয়তো বাজার থেকে একেবারে চলে গেছেন। আরেকটি অংশ চুপচাপ বসে থেকে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। সাধারণত বাজারে কিছুটা উত্থান–পতন থাকলে বিনিয়োগকারীদের একটি শ্রেণি সাইড লাইনে চলে যান। বাজার যখন বাড়তে শুরু করে আবার তাঁরা সক্রিয় হন।
সিডিবিএলের আরেক তথ্যে দেখা যায়, ১৫ ডিসেম্বর লেনদেন শেষে শেয়ার আছে এমন বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৫টি। ২৩ ডিসেম্বর দিন শেষে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩২টিতে। অর্থাৎ শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে শেয়ার আছে এমন বিও হিসাবের সংখ্যা। দিন শেষে বিও হিসাবে শেয়ার না থাকা মানে ওই বিও হিসাব বা বিনিয়োগকারীর বাজারে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া। হয় তাঁরা বাজার থেকে একেবারে বিনিয়োগ তুলে নিয়েছেন, নয়তো সাময়িকভাবে বিও হিসাব খালি করে চুপচাপ বসে আছেন। যাঁরা বাজার ছেড়েছেন, তাঁরা আদৌ বাজারে ফিরবেন কী না, তা নিয়ে আছে শঙ্কা। আর যাঁরা চুপচাপ বসে আছেন, তাঁরা আবারও সুযোগ বুঝে সক্রিয় হবেন। এখন অপেক্ষার পালা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া এসব বিনিয়োগকারীর সক্রিয় হয়ে ওঠার।