দাম কমতে পারবে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ

সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া ৬৬ কোম্পানির বড় পতন ঠেকাতে এবার নতুন করে আবার সীমা বেঁধে দেওয়া হলো। তাতে এই ৬৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম এক দিনে ২ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নতুন এ বিধান করেছে। গতকাল থেকেই এ নির্দেশনার কার্যকারিতা শুরু হয়ে গেছে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় ৬৬ কোম্পানির দরপতনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২ শতাংশের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবে মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশই বহাল থাকবে। এ জন্য ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর জারি করা শেয়ারের দামের উত্থান-পতনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা বা সার্কিট ব্রেকারসংক্রান্ত নির্দেশনায় কিছুটা সংশোধনী আনা হয়েছে।

২০১৯ সালের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, যেসব কোম্পানির শেয়ারের বাজারমূল্য ২০০ টাকার কম, সেসব শেয়ারের দাম এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারবে। অর্থাৎ এ নিয়মে বাজারে যে শেয়ারের দাম ১০ টাকা, ওই শেয়ারের দাম এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বা ১ টাকা বেড়ে হতে পারবে ১১ টাকা। একইভাবে সর্বোচ্চ ১ টাকা কমে ৯ টাকায় নামতে পারবে। কিন্তু বিএসইসির নতুন বিধানের ফলে এখন ৬৬ কোম্পানির ক্ষেত্রে ১০ টাকা বাজারমূল্যের শেয়ার এক দিনে সর্বোচ্চ কমতে পারবে ২০ পয়সা।

এর আগে গত বুধবার বিএসইসির সভায় ৬৬ কোম্পানির শেয়ারের ওপর থেকে সর্বনিম্ন মূল্যস্তর তুলে নেওয়া হয়। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ফলে বৃহস্পতিবার এসব কোম্পানির বেশির ভাগেরই সর্বোচ্চ দরপতন ঘটে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রদান সূচক ডিএসইএক্স ৮৩ পয়েন্ট বা দেড় শতাংশের বেশি কমে গেছে। এ অবস্থায় এসব শেয়ারের এক দিনের সর্বোচ্চ পতনের সীমা কমিয়ে ২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

গত বছরের মার্চে শেয়ারবাজারের অস্বাভাবিক পতন ঠেকাতে শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এরপর শতাধিক কোম্পানির শেয়ার বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তরে আটকে যায়। এতে ওই সব কোম্পানির শেয়ারের কোনো লেনদেন হচ্ছিল না। তাই লেনদেন না হওয়া কোম্পানিগুলোকে লেনদেনে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে ৬৬টির ওপর থেকে মূল্যস্তর তুলে নেওয়া হয়।

শতাধিক কোম্পানির মধ্য থেকে এসব কোম্পানি বেছে নেওয়া হয়েছে কারণ, সূচকে তাদের খুব বেশি প্রভাব নেই। ডিএসইর বাজার মূলধনের মাত্র ৫ শতাংশ এসব কোম্পানির দখলে। তাই বিএসইসি ভেবেছিল, এগুলোর ওপর থেকে মূল্যস্তর তুলে নিলে তাতে সূচকে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। কিন্তু ঘটেছে উল্টোটা। মূল্যস্তর তুলে নেওয়ার প্রভাবে বেশির ভাগ শেয়ারের দাম পড়ে যায় বৃহস্পতিবার।