বন্দরে পড়ে আছে ৯৮ কোটি টাকার পেঁয়াজ

চট্টগ্রাম বন্দর
ফাইল ছবি

বাজারে দরপতনের কারণে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পেঁয়াজ খালাস করে নেওয়ার হার আগে থেকেই কম ছিল। নতুন বছরের প্রথম দিন ভারত রপ্তানির দুয়ার খুলে দেওয়ার পর বাজারে আরেক দফা দরপতন হয়। এরপর থেকে পেঁয়াজ খালাস অস্বাভাবিক কমে গেছে।

বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, রোববার সকাল থেকে গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত এক দিনে বন্দর থেকে পেঁয়াজ খালাস হয়েছে মাত্র ৫৫ টন। অথচ ভারত রপ্তানির দুয়ার খোলার আগে দিনে গড়ে খালাস হতো এক থেকে দুই হাজার টন। খালাস কম হওয়ায় বন্দরে পেঁয়াজের স্তূপও কমছে না।

এখন বিকল্প দেশ থেকে আমদানি হওয়া প্রায় ২৩ হাজার টন পেঁয়াজ বন্দর চত্বরে পড়ে আছে। জাহাজ থেকে খালাসের অপেক্ষায় আছে আরও ৩ হাজার টন। সব মিলিয়ে ২৬ হাজার টন পেঁয়াজ এখন বন্দরে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এসব পেঁয়াজের টনপ্রতি গড় আমদানি মূল্য ৪৪৩ ডলার। এ হিসাবে বন্দরে পড়ে থাকা পেঁয়াজ ১ কোটি ১৫ লাখ ডলারে কেনা হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯৮ কোটি টাকা।

হিমায়িত কনটেইনার থেকে খালাস করার পর এসব পেঁয়াজ বেশি দিন রাখা যায় না। পচে যায়। এ জন্য অগ্রিম বিক্রি করার পরই পেঁয়াজ খালাস করেন ব্যবসায়ীরা। দরপতনের পাশাপাশি ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসায় বিকল্প দেশের পেঁয়াজের চাহিদা কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, খালাস কমে যাওয়ার বড় কারণ এটি।

চট্টগ্রামের হালিশহরের রায়হান করপোরেশনের চার কনটেইনার পেঁয়াজ নিউজিল্যান্ড থেকে বন্দরে এসে পৌঁছায় প্রায় এক মাস আগে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার রায়হানুল ইসলাম বলেন, আগে ২৬ কনটেইনার বিক্রি করলেও এই ৪ কনটেইনার বিক্রির জন্য ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে খালাস করা যাচ্ছে না।

প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে দেশে পেঁয়াজ নিয়ে সংকট তৈরি হয়। এ সময়ে বিশ্বের ১৯ দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দামও কমে আসে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়, যার সিংহভাগই আমদানি হয়েছে।

খালাস না নেওয়া পেঁয়াজের প্রায় দুই হাজার টন নিলামে তোলার জন্য কাস্টমসের হাতে নথিপত্র তুলে দিয়েছে বন্দর। প্রতিদিন এই তালিকা বড় হচ্ছে। তবে কাস্টমস এখনো নিলামে তোলেনি। নিলামের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার ফয়সাল বিন রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বন্দর থেকে নথি হাতে পাওয়ার পরই ১০ দিনের মধ্যে খালাস করার জন্য আমদানিকারকদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অনেকে নিয়েছেন। এরপরও যেসব পেঁয়াজ খালাস হয়নি, সেগুলো এ মাসে নিলামে তুলে বিক্রি করা হবে।