বন্ধের আগে শেয়ারবাজার থেকে টাকা তুলতে পারবেন না বিনিয়োগকারীরা

করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে দেওয়া সর্বাত্মক লকডাউন কর্মসূচির আওতায় ব্যাংক বন্ধ থাকছে। ব্যাংক বন্ধের কারণে আগামীকাল থেকে শেয়ারবাজারও এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। সেই হিসাবে বন্ধের আগে আজ মঙ্গলবারই শেষ কার্যদিবস। শেষ কার্যদিবস হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার থেকে শেয়ার বিক্রি করে বন্ধের আগে টাকা তোলার সুযোগ পাচ্ছেন না। কারণ, আজ শেয়ার বিক্রি করলে সেই লেনদেন ছুটির আগে আর নিষ্পত্তি হবে না।

নিয়ম অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে শেয়ার কেনাবেচার লেনদেনটি সম্পন্ন হতে ন্যূনতম দুই দিন সময় লাগে। অপেক্ষাকৃত ভালো মৌলভিত্তির লেনদেন নিষ্পত্তি করতে এ সময় লাগে। দুর্বল বা মন্দ মানের ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত কোম্পানির লেনদেন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এ সময় তিন দিন।

লেনদেন বন্ধ থাকলেও ঘুরবে সুদের চাকা। যাঁরা প্রান্তিক ঋণ (মার্জিন লোন) নিয়ে শেয়ার কিনেছেন, তাঁরাও ঋণ সমন্বয়ের সুযোগ পাবেন না। কারণ কোনো ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারী যদি সব শেয়ার বিক্রি করে আজই ঋণ পরিশোধের উদ্যোগ নেন, সেটি পারবেন না।

সেই হিসাবে কেউ আজ শেয়ার বিক্রি করলে বা কিনলে ওই শেয়ারের লেনদেন কোনোভাবেই আগামী পরশু দিনের আগে নিষ্পত্তি হবে না। লেনদেন নিষ্পত্তি হওয়ার পরই কেবল একজন বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রির টাকা তোলার আবেদন করতে পারেন। অর্থাৎ করোনার কারণে সরকার ঘোষিত ছুটি শেষ হওয়ার আগে শেয়ারবাজার থেকে টাকা তোলার সুযোগ নেই।

আবার লেনদেন বন্ধ থাকলেও ঘুরবে সুদের চাকা। যাঁরা প্রান্তিক ঋণ (মার্জিন লোন) নিয়ে শেয়ার কিনেছেন, তাঁরাও ঋণ সমন্বয়ের সুযোগ পাবেন না। কারণ কোনো ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারী যদি সব শেয়ার বিক্রি করে আজই ঋণ পরিশোধের উদ্যোগ নেন, সেটি পারবেন না। কারণ লেনদেন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই ঋণ সমন্বয় হবে না।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বন্ধের আগে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য আজকের দিনটি অনেকটাই নিয়ম রক্ষার। কারণ, এ দিনে শেয়ার কেনা ছাড়া বিক্রি করে বিনিয়োগকারীরা না পারবেন টাকা তুলতে, না পারবেন ঋণ সমন্বয় করতে।

এদিকে, গতকাল সোমবার সরকারি নির্দেশনা জারির পর বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকও ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধের ঘোষণা দেয়। ওই ঘোষণার পরপরই শেয়ারবাজারের লেনদেন বন্ধের কথা জানায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, যখনই ব্যাংক খুলবে, তখনই শেয়ারবাজারে পুনরায় লেনদেন চালু হবে।

এ নিয়ে করোনায় দ্বিতীয় দফায় শেয়ারবাজারের লেনদেন বন্ধ হতে যাচ্ছে। এর আগে প্রথম দফায় গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে একটানা ৬৬ দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। এ বন্ধের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নেতৃত্বও বদল হয়। নতুন নেতৃত্ব এসে ৩১ মে থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু করে। ওই সময়ও লেনদেন বন্ধ থাকলেও ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ঋণের সুদ গুনতে হয়েছে লেনদেনে অংশ না নিয়েই।

আরও পড়ুন