শেয়ারবাজারের কোনো বিনিয়োগকারীর বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবে টানা এক মাস এক লাখ টাকা অলস পড়ে থাকলে সেই টাকার বিপরীতে এখন থেকে সুদ পাবেন ওই বিনিয়োগকারী। সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউসই এ সুদ দেবে বিনিয়োগকারীদের। গতকাল সোমবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই আদেশ জারি করেছে। এত দিন বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে বছরের পর বছর অলস টাকা পড়ে থাকলেও তার বিপরীতে কোনো সুদ পেতেন না তাঁরা। অথচ বিনিয়োগকারীদের ওই অর্থ ব্যাংকে জমা রেখে সুদ পেত সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস। এখন থেকে সেই সুদের ভাগ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
টানা এক মাস এক লাখ টাকা অলস পড়ে থাকলে সেই টাকার বিপরীতে এখন থেকে সুদ পাবেন সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী।
বিএসইসির এ–সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছে, অর্থবছরের যেকোনো এক মাস বিনিয়োগকারীর বিও হিসাবে এক লাখ টাকা নগদ পড়ে থাকলে তিনি ওই টাকার বিপরীতে সুদ পাবেন। তবে একজন বিনিয়োগকারী সুদের টাকা তখনই পাবেন, যখন এ বাবদ তাঁর প্রাপ্য ৫০০ টাকা বা তার ওপরে হয়। উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, একজন বিনিয়োগকারীর বিও হিসাবে এক টানা দুই মাস এক লাখ টাকা অব্যবহৃত বা অলস পড়ে ছিল। নিয়ম অনুযায়ী তিনি ওই টাকার বিপরীতে সুদ পাওয়ার কথা। হিসাব করে দেখা গেল, ওই বিনিয়োগকারীর প্রাপ্য সুদের পরিমাণ ৩০০ টাকা। তাহলে সুদ বাবদ ওই ৩০০ টাকা সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর মধ্যে বিতরণ করা হবে না। যখন সুদ বাবদ প্রাপ্য ৫০০ টাকায় পৌঁছাবে, তখন সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস ওই বিনিয়োগকারীকে এ অর্থ পরিশোধ করবে।
বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিএসইসির এ সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি ব্রোকারেজ হাউসগুলোও চেষ্টা করবে বিনিয়োগকারীদের অর্থ অলস ফেলে না রেখে শেয়ারে বিনিয়োগ করতে।
শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা ব্রোকারেজ হাউসের (বর্তমানে ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সাটিফিকেট বা ট্রেক হিসেবে পরিচিত) মাধ্যমে লেনদেনে অংশ নেন। শেয়ার কেনার জন্য বিনিয়োগকারীরা তাঁদের পছন্দের ব্রোকারেজ হাউসে খোলা বিও হিসাবের বিপরীতে টাকা জমা দেন। একটি ব্রোকারেজ হাউসে হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব থাকে। এসব বিও হিসাবে জমা হওয়া টাকা সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস তাদের ব্যাংক হিসাবে বিনিয়োগকারীদের সমন্বিত অর্থ হিসেবে জমা করে। যেহেতু ওই ব্যাংক হিসাব ব্রোকারেজ হাউসের নামে থাকে, তাই সেখানে রাখা বিনিয়োগকারীদের অর্থ থেকে সুদ পায় সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস। এত দিন সেই সুদের কোনো ভাগ অর্থের মালিক বিনিয়োগকারী পেতেন না।
এত দিন বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে বছরের পর বছর অলস টাকা পড়ে থাকলেও তার বিপরীতে কোনো সুদ পেতেন না তাঁরা। অথচ বিনিয়োগকারীদের ওই অর্থ ব্যাংকে জমা রেখে সুদ পেত সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউস।
বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিএসইসির এ সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি ব্রোকারেজ হাউসগুলোও চেষ্টা করবে বিনিয়োগকারীদের অর্থ অলস ফেলে না রেখে শেয়ারে বিনিয়োগ করতে। কারণ ব্রোকারেজ হাউসগুলো চাইবে যাতে এক মাসের বেশি কোনো বিনিয়োগকারীর বড় অঙ্কের টাকা অলস পড়ে না থাকে।