বিমার দাপটে কমল ভালো শেয়ারের দাম

শেয়ারবাজারে গতকাল মঙ্গলবার ছিল যেন বিমার দিন। এদিন তালিকাভুক্ত বিমা খাতের সব কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর এ মূল্যবৃদ্ধির কারণ ছিল বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের দেওয়া একটি নির্দেশনা। যেখানে বিমা আইন অনুযায়ী, বিমা কোম্পানির উদ্যোক্তা–পরিচালকদের ন্যূনতম ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণের কথা বলা হয়েছে। এ খবরে গতকাল লেনদেনের শুরু থেকেই বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল লেনদেন হওয়া বিমা খাতের ৪৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৬টিরই দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার এদিন সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির পর বিক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার ঢাকার বাজারে মূল্যবৃদ্ধির দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে ১০টিই ছিল বিমা কোম্পানি। এগুলো হলো অগ্রণী, গ্রিন ডেল্টা, প্রগতি, প্রভাতী, ঢাকা, ইসলামী, ইউনাইটেড, এশিয়া প্যাসিফিক, পিপলস ও রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স।

কিছুদিন আগেও শেয়ারবাজারে বিমা খাতের শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। সেটিও ঘটেছিল বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে পুঁজি করে। গতকালও তার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এক দফায় একটানা অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পর এমনিতেই অনেক বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। এরপর নতুন করে আবার বিমা শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি পুরো বাজারে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

বিমা কোম্পানির শেয়ারের রমরমা দিনে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন কমে গেছে। তবে সূচকের কিছুটা উন্নতি হয়েছে দুই বাজারেই। ঢাকার বাজারের প্রধান সূচকটি গতকাল ১৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮২১ পয়েন্টে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি ৩০ পয়েন্ট বেড়েছে। ডিএসইতে দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৯১ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ২২৯ কোটি টাকা বা প্রায় ১৫ শতাংশ কম। চট্টগ্রামের বাজারে এদিন লেনদেন হয় ৮৭ কোটি টাকার, যা আগের দিনের চেয়ে ১১ কোটি টাকা কম।

বিমার দাপটের দিনে মূল্যহ্রাসের দিক থেকে শীর্ষে ছিল ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি। ঢাকার বাজারে মঙ্গলবার দরপতনের শীর্ষে ছিল পদ্মা অয়েল। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম এদিন প্রায় ৮ শতাংশ বা সাড়ে ১৭ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ২০৫ টাকায়। এ ছাড়া দরপতনের শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় আরও রয়েছে ডেসকো, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম, আইএফআইসি, এবি ব্যাংকের মতো কোম্পানি।

এদিকে গতকাল থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি এনার্জি পাওয়ার জেনারেশনের। প্রথম দিনেই কোম্পানিটির শেয়ারের বেঁধে দেওয়ার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বা সাড়ে ১৫ টাকা মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। তাতে ৩১ টাকার প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও শেয়ারের দাম ওঠে সাড়ে ৪৬ টাকায়। তা–ও দিনের লেনদেনের প্রায় পুরোটা সময়ই এটির শেয়ার বিক্রেতাশূন্য অবস্থায় ছিল। এ কারণে ঢাকার বাজারে গতকাল এনার্জিপ্যাকের মাত্র ৮০৫টি শেয়ারের হাতবদল হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে লেনদেন শুরুর পর বেশ কিছুদিন বিক্রেতাশূন্য থাকছে এসব শেয়ার। গত মাসে তালিকাভুক্ত হওয়া রবি আজিয়াটার শেয়ারের একটানা ১৫ কার্যদিবস সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে।