সূচকের বড় পতন থামাল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তি

সকালের আতঙ্ক কেটে গেল দুপুর না গড়াতেই। আর সেই আতঙ্ক দূর করতে বড় ভূমিকা ছিল একটি ‘বিজ্ঞপ্তির’। সেটি ছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের, সভা আহ্বানসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি। তাতেই শেয়ারবাজারের সকালের পড়তি সূচক ঘুরে গেল দুপুরের আগে। এ কারণে বড় পতনের শঙ্কার বিপরীতে সূচকের বড় উত্থান দেখলেন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা।

গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সভার আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে দুই সংস্থার পরস্পরবিরোধী অবস্থান তৈরি হয়। মঙ্গলবার সভা শেষে বিএসইসির পক্ষ থেকে সভার কিছু সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। কিন্তু বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মঙ্গলবারের সভায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হলেও কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। দুই সংস্থার দুই ধরনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিপরীতমুখী অবস্থানের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এতে গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। সেই আতঙ্কের প্রভাব দেখা যায় গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে।

লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটের মধ্যেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯০ পয়েন্ট পড়ে যায়। এরপর সূচক কিছুটা বেড়ে আবার পড়ে যায়। এভাবেই দুই ঘণ্টা লেনদেন চলে। ততক্ষণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সেই বিজ্ঞপ্তি। ১ ডিসেম্বর তারিখে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটিতে শেয়ারবাজার নিয়ে একটি সভার কথা জানানো হয়।

■ লেনদেন শুরুর প্রথম ৫ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯০ পয়েন্ট পড়ে যায়। ■ দিন শেষে একই সূচক ৮৯ পয়েন্ট বা সোয়া ১ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

পুঁজিবাজার কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকিতে অর্থ মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটির পক্ষ থেকে ৭ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ সভা আহ্বান করা হয়। সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসিসহ পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ অংশ নেবে। ওই বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে পড়ার পর আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা আবারও আশান্বিত হয়ে ওঠেন। তাতে থামে আতঙ্কের বিক্রি। এতে দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচকটি ৮৯ পয়েন্ট বা সোয়া ১ শতাংশের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৩৬ পয়েন্টে। বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। গতকাল ঢাকার বাজারে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১৪৩ কোটি টাকা বেশি।

এদিকে বাজারের উত্থান-পতন থাকলেও টানা উত্থান থামছে না নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি সেনাকল্যাণ ইনস্যুরেন্সের শেয়ারের দামের। মাত্র ২০ কার্যদিবসে কোম্পানিটির ১০ টাকার শেয়ারের দাম হয়ে গেছে সাড়ে ৬৫ টাকা। অর্থাৎ ২০ দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে সাড়ে গুণ। গত ৭ নভেম্বর শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও শেয়ারের লেনদেন শুরু হয়। লেনদেন শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ করে বাড়ছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যে কোম্পানি আইপিওতে ১০ টাকা দামে শেয়ার বিক্রি করেছে, বাজারে সেই শেয়ারের দাম ২০ দিনে ৬৫ টাকা হওয়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই।