৪৯ হাজার টাকায় নতুন মোটরসাইকেল

মাত্র ৪৯ হাজার টাকায় নতুন মোটরসাইকেল বিক্রি করছে বিএসইসির অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান এটলাস বাংলাদেশ। কোম্পানিটির বার্ষিক মোটরসাইকেল উৎপাদনের ক্ষমতা ৭ হাজার। চীনা কোম্পানি জংশেন গ্রুপ এই মোটরসাইকেল উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। তাই এটলাসের মোটরসাইকেল ব্র্যান্ডের নাম ‘জংশেন-এটলাস’ (জেডএস)। এই ব্র্যান্ডের ছয় ধরনের মোটরসাইকেল রয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, এটলাস বাংলাদেশ সবচেয়ে কম অর্থাৎ ৪৯ হাজার টাকায় জেডএস ৮০ মডেলের ৮০ সিসির মোটরসাইকেল বিক্রি করছে। আর সর্বোচ্চ ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় মিলছে ১৫০ সিসির জেডএস ১৫০-৫৮ মডেলের মোটরসাইকেল এবং ১৫০ সিসির জেড-ওয়ান মডেলের মোটরসাইকেলও। এ ছাড়া জেডএস ১২৫-৬৮ মডেলের ১২৫ সিসির মোটরসাইকেল ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়, জেডএস ১১০-৭২ মডেলের ১১০ সিসির মোটরসাইকেল ৮৯ হাজার টাকায় এবং জেডএস ১০০-২৭ মডেলের ১০০ সিসির মোটরসাইকেল ১ লাখ ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জংশেন গ্রুপের পাশাপাশি ২০১৮ সালের মাঝামাঝি দুই বছরের জন্য স্থানীয় টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গেও এটলাসের চুক্তি হয়। পরে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয় ৫ বছরের জন্য। সে অনুযায়ী ১ লাখ ১৪ হাজার ৯০০ টাকায় ১১০ সিসি, ১ লাখ ৩২ হাজার ৯০০ টাকায় ১২৫ সিসি এবং ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯০০ টাকায় ১৬০ সিসির টিভিএস ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল বিক্রি হচ্ছে। টিভিএসের সঙ্গে চুক্তিটি এ রকম—টিভিএস থেকে এটলাস বছরে ১৫ থেকে ২০ হাজার সিকেডি (সম্পূর্ণ বিযুক্ত অবস্থা) কিনে নেবে।

তবে অবাক করা বিষয় হলো, সস্তায় মোটরসাইকেল উৎপাদন করেও এটলাস মুনাফা করতে পারছে না। বিএসইসির তথ্য বলছে,
২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে প্রতিবছরই লোকসান গুনছে এটলাস বাংলাদেশ। আর ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসেই লোকসান গুনেছে আড়াই কোটি টাকা।

গাজীপুরের টঙ্গীতে ৯ দশমিক ৬২ একর জমির ওপর এটলাসের এই কারখানা অবস্থিত। এটি ১৯৬৬ সালে হোন্ডা মোটর কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করে। ১৯৯৩ সালে ব্যবসা শুরু হয় ভারতীয় হিরো মোটরসাইকেলের সঙ্গে। ২০১১ সালে হোন্ডার সঙ্গে হিরোর অংশীদারত্ব বিচ্ছিন্ন হয়। বর্তমানে জাপানের হোন্ডা এবং ভারতীয় হিরো নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পৃথকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে। ২০১৪ সালের জুনে এটলাসের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এক বছরের বেশি সময় বিরতি দিয়ে ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে চীনের জংশেন গ্রুপের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করে এটলাস। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে এটলাসের ৬৬টি ডিলার থাকলেও গত মাসে তা কমে দাঁড়ায় ৫৩টিতে।

গত ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এটলাসের বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থাপিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রতিবেদনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু নাছের মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এই প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে লোকসান কাটিয়ে আগের মতো সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে এটলাসের শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে কামরুল ইসলাম ৫ জানুয়ারি জানান, এরই মধ্যে অবসরে গেছেন বলে তিনি কথা বলতে আগ্রহী নন।