টুইটারে অর্থের প্রবাহ নেতিবাচক, বিজ্ঞাপন আয় কমেছে ৫০%
টুইটারের দিনকাল ভালো যাচ্ছে না। ইলন মাস্ক গত বছরের অক্টোবরে বিশ্বের অন্যতম বড় এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানির দায়িত্ব নেওয়ার পর টুইটারের অবস্থা দিনকে দিন খারাপই হচ্ছে।
ইলন মাস্ক নিজেই জানিয়েছেন, টুইটারের ক্যাশ ফ্লো বা অর্থের প্রবাহ এখনো নেতিবাচক ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। তার কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, কোম্পানির বিজ্ঞাপনী রাজস্ব ৫০ শতাংশ কমেছে এবং সেই সঙ্গে কোম্পানির ঋণও অনেক বেশি। যদিও মার্চে মাস্ক বলেছিলেন, জুনের মধ্যে কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো ইতিবাচক ধারায় আসবে।
রয়টার্সের খবরে জানানো হয়েছে, ইলন মাস্ক গত অক্টোবর থেকেই অত্যন্ত আগ্রাসীভাবে কোম্পানির ব্যয় কমাচ্ছেন। কিন্তু টুইটারের পরিস্থিতি দেখেই বোঝা যায়, কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো ইতিবাচক ধারায় নিয়ে যেতে শুধু খরচ কমালেই হবে না, বরং আয় বাড়াতে হবে। বিজ্ঞাপনদাতারা টুইটার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক কর্মীকে ছাঁটাই করেছেন ইলন মাস্ক এবং সেই সঙ্গে কোম্পানির ক্লাউড সেবার মাশুল কমিয়েছেন। মাস্ক নিজেই বলেছেন, ২০২৩ সালে কোম্পানির সম্ভাব্য ঋণবহির্ভূত ব্যয় ৪৫০ কোটি ডলার থেকে কমিয়ে তিনি ১৫০ কোটি ডলারে নামিয়েছেন। তবে মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৪৪০ কোটি ডলারে এ কোম্পানি কেনার সময় যে ঋণ নিয়েছেন, সেই ঋণের সুদ বাবদ বছরে ১৫০ কোটি ডলার টুইটারকে ব্যয় করতে হবে।
বিজ্ঞাপনের রাজস্ব ৫০ শতাংশ কমে যাওয়া যে কথা মাস্ক বলেছেন, তা ঠিক কোন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সেটা পরিষ্কার নয়। এ ছাড়া তিনি বলেছেন, ২০২৩ সালে টুইটার ৩০০ কোটি ডলার রাজস্ব আয় করবে, যদিও ২০২১ সালে তা ছিল ৫১০ কোটি ডলার।
মাস্ক টুইটারের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্ট মডারেশনে অনেক শিথিলতা এসেছে। বিজ্ঞাপনদাতারা সে কারণেও টুইটার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কারণ, তাঁরা চান না অযথাযথ কোনো কন্টেন্টের পাশে তাঁদের বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হোক।
অ্যাকাউন্ট সাবস্ক্রিপশন থেকে আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করছে টুইটার, কিন্তু একই সঙ্গে তারা বিজ্ঞাপনী রাজস্ব বৃদ্ধির চেষ্টাও করে যাচ্ছে। এনবিসি ইউনিভার্সালের বিজ্ঞাপন বিভাগের সাবেক প্রধান লিন্ডা ইয়াকারিনোকে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেওয়ার সেটাই মূল কারণ।
লিন্ডা ইয়াকারিনো এনবিসিইউর সঙ্গে প্রায় এক যুগের মতো যুক্ত ছিলেন। সেখানে সম্প্রতি তিনি গ্লোবাল অ্যাডভারটাইজিং অ্যান্ড পার্টনারশিপ বিভাগের চেয়ারপারসন হয়েছিলেন। কোম্পানিটিতে দায়িত্ব পালনকালে ইয়াকারিনো মিডিয়া নেটওয়ার্কটির টেলিভিশন ও ডিজিটাল বিভাগে বিজ্ঞাপনী কৌশল প্রণয়নে নেতৃত্ব দেন। পাশাপাশি ২০২০ সালে বিজ্ঞাপননির্ভর স্ট্রিমিং পরিষেবা ‘পিকক’ চালুর ক্ষেত্রেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।