আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের একটি অংশের প্রায় ১ লাখ ৭৬টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে আগেই। এবার তৃতীয় পর্যায়ের বাকি অংশ ও চতুর্থ পর্যায়ে প্রায় ৫৮ হাজার গৃহ হস্তান্তরের পালা। এ হস্তান্তর অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে এবং এতে একটা খরচের বিষয় রয়েছে।
চলতি মার্চ মাসেই সরাসরি অথবা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ হস্তান্তর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা ছাড়াই এ খরচ করার প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
আজ বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত কমিটির এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগের প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ব্রিফিং শুরুর আগেই সম্মেলনকক্ষ থেকে নিজ কার্যালয়ে চলে যান অর্থমন্ত্রী। তাই সাংবাদিকেরা তাঁকে প্রশ্ন করার সুযোগ পাননি। তবে ২০২০ সালের মার্চে কোভিড-১৯ শুরুর পর ক্রয় কমিটির প্রায় সব বৈঠকই জুম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করে আসছিলেন অর্থমন্ত্রী। লম্বা সময় পর তিনি আজ সরাসরি বৈঠক করলেন।
সাঈদ মাহবুব খান জানান, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় শিগগির ৫৭ হাজার ৭৩৭টি গৃহ হস্তান্তর করা হবে। অনুষ্ঠানের ব্যয় নির্বাহ করা হবে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে (ডিটিএম)। উন্মুক্ত দরপদ্ধতির পরিবর্তে ডিটিএমে ব্যয় করার যুক্তি জানতে চাইলে সাঈদ মাহবুব খান বলেন, এটা তিনি বলতে পারবেন না।
সাঈদ মাহবুব খান আরও বলেন, গৃহ হস্তান্তর উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে একটি ভিডিও কনফারেন্স হয়। সেই আয়োজনের বিষয়টিই এখানে এসেছে। তিনি না জানালেও সূত্রগুলো জানায়, হস্তান্তর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করতে সাত কোটি টাকার মতো ব্যয় হবে।
অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পাশাপাশি পাঁচটি প্রস্তাব নিয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকও আজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করার জন্য ৩৩৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ের চারটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এ কাজ হবে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) মাধ্যমে। প্রকল্পটির নাম ‘পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার’ প্রকল্প। একটি প্রস্তাব অবশ্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের।
সাঈদ মাহবুব খান বলেন, প্রায় ৬২ কোটি টাকার প্রকল্পের পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদ খননের পূর্ত কাজ পেয়েছে এস এস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। অন্যদিকে যৌথ উদ্যোগে স্প্রেক্টা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এবং ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড পেয়েছে ৯৯ কোটি টাকার কাজ। এ ছাড়া ওরিয়েন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডার্স ৮৮ কোটি এবং সোনালী ও এনডিই পেয়েছে ৮৮ কোটি টাকার কাজ।