জাপানে প্রথম ক্যাসিনো খোলার অনুমতি

জাপান সরকার প্রথমবারের মতো ক্যাসিনো খোলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। ক্যাসিনো কমপ্লেক্সটি আগামী ২০২৯ সালে সেই দেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ওসাকায় গড়ে তোলা হবে। এর আগে ২০১৮ সালে জাপান কিছু ক্যাসিনো গেমের অনুমতি দিয়ে একটি আইন পাস করে।

এ নিয়ে খবর বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানি কর্মকর্তারা দেশের প্রথম জুয়া রিসোর্ট নির্মাণের বিতর্কিত পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। জাপানে দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাসিনো ব্যবসা অবৈধ। এ রকম অবস্থায় গত ২০১৮ সালে জাপান সরকার এ–সংক্রান্ত একটি আইন পাস করেছিল। দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও পর্যটনশিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে পোকার বা ব্যাকারেটের মতো গেমগুলো খেলার অনুমতি দেওয়া হয় সে আইনে।

এদিকে সরকার ক্যাসিনো খোলার অনুমতি দেওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন জাপানের জনগণ। যাঁরা এই অনুমোদনের বিরোধিতা করছেন, তাঁদের যুক্তি হলো, এতে অপরাধ ও জুয়ার আসক্তি বাড়বে। এ জন্য তাঁরা উদ্বিগ্ন।

অনুমোদিত ক্যাসিনো কমপ্লেক্সটির আয়তন হবে ৫ দশমিক ৩ মিলিয়ন বা ৫৩ লাখ বর্গফুট। এতে একটি হোটেল, সম্মেলনকেন্দ্র, শপিং মল ও জাদুঘর থাকবে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, ‘আশা করি, এই ক্যাসিনো একটি পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠবে, যা বিশ্বের কাছে জাপানের আকর্ষণকে প্রচার করবে।’

বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতি জাপানের এই ক্যাসিনো প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে বিনিয়োগ হচ্ছে ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি জাপানি ইয়েন, যা ১ হাজার ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সমান। বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাসিনো অপারেটর এমজিএম ও জাপানের ওরিক্স গ্রুপ ক্যাসিনো কোম্পানিটিতে ৪০ শতাংশ করে শেয়ারের মালিক। জাপানের ওয়েস্ট জাপান রেল, কানসাই ইলেকট্রিক পাওয়ার ও ওসাকাভিত্তিক প্যানাসনিক এসব স্থানীয় কোম্পানি বাকি ২০ শতাংশ শেয়ারের মালিক।

জাপানি কর্মকর্তারা আশা করছেন যে ক্যাসিনো কমপ্লেক্সটিতে বছরে প্রায় দুই কোটি দর্শনার্থীর সমাগম ঘটবে, যা এ অঞ্চলে বছরে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ইয়েনের সমপরিমাণ অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসবে। সেই দেশের একটি বার্তা সংস্থা এ খবর দিয়েছে।

ক্যাসিনো প্রকল্পটি কয়েক বছর আগে প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি এবং ক্ষমতাসীন দলের একজন আইনপ্রণেতা এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি–কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন, এমন অভিযোগে প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনে বিলম্ব ঘটে। ওই সংসদ সদস্য ক্যাসিনো–নীতির দায়িত্বে থাকাকালে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।