সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকে পেপালের প্রতিষ্ঠাতার পাঁচ কোটি ডলার আটকে গেছে

পেপাল কার্যালয়
রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থ স্থানান্তরকারী প্রতিষ্ঠান পেপালের সহপ্রতিষ্ঠাতা পিটার থিয়েলের ৫০ মিলিয়ন বা ৫ কোটি ডলার আটকে গেছে। গত বৃহস্পতিবার পিটার থিয়েল নিজেই ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকাকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। তিনি সিলিকন ভ্যালির একজন প্রভাবশালী উদ্যোক্তা। খবর দ্য গার্ডিয়ান

থিয়েলের প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডার ফান্ডই প্রথম স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক থেকে অর্থ সরানোর পরামর্শ দিয়েছিল। সিলিকন ভ্যালি ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার এটিই মূল কারণ, অর্থাৎ এর দায়ভার অনেকটা তাঁর কাঁধেই এসেছে। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত ৪০০ কোটি সম্পদের মধ্যে ৫০ কোটি ডলারের সম্পদ সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকে রেখেছিলেন। এখন সেই অর্থই আটকে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক দলের সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার এবিসি নিউজকে বলেন, ‘সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক থেকে ১ দিনেই ৪২ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ২০০ কোটি ডলার তোলা হয় এবং আমি মনে করি, কিছু মানুষের কারণে এই ধস ত্বরান্বিত হয়েছে। খুব কম সময়ের মধ্যে সব কিছু ঘটেছে।’

সংবাদ পোর্টাল এ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থিয়েল নিজে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক থেকে আমানত সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেননি। কিন্তু বাজারে গুজব আছে, থিয়েলের ফাউন্ডার্স ফান্ডের সঙ্গে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের দ্বন্দ্বের কারণে আমানত সরিয়ে নেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে।

ফাউন্ডার্স ফান্ডের প্রধান নির্বাহী নেইল রুথভেন এ্যাক্সিওসকে বলেন, ‘আমরা যা করেছি, তা মূলত আমাদের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থার প্রতিদান হিসেবে।’

ইতিমধ্যে মার্কিন সরকার নিশ্চিত করেছে সিলিকন ভ্যালির যেসব আমানতকারীর অর্থ আটকে আছে, তাঁরা অর্থ ফেরত পাবেন। এমনকি যাঁদের আমানতের পরিমাণ বিমাকৃত আড়াই লাখ ডলারের বেশি, তাঁরাও অর্থ ফেরত পাবেন।

উল্লেখ্য, স্টার্টআপের জন্য ঋণ দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি) ৮ মার্চ এক ঘোষণা দেয়, ব্যালান্স শিট বা স্থিতিপত্র শক্তিশালী করতে তারা ২২৫ কোটি ডলার সমমূল্যের শেয়ার বিক্রি করবে। কিন্তু এই এক ঘোষণাই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। এই ঘোষণায় ব্যাংকের গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। পরদিন ব্যাংকটির শেয়ারের দর ৬০ শতাংশ কমে যায়। আমানতকারীরা তুলে নেন ৪ হাজার ২০০ কোটি ডলার।

বিনিয়োগকারীরা ভাবেন, এ ঘোষণায় ব্যাংকটি থেকে অর্থ তুলে নেওয়ার প্রবণতা আরও বেড়ে যেতে পারে। পরে ১০ মার্চ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধ করে দেয়। এর তিন দিন পর বন্ধ হয়ে যায় সিগনেচার ব্যাংক।

২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর এই প্রথম কোনো পশ্চিমা ব্যাংক এভাবে বন্ধ হয়ে গেল। শুধু তা-ই নয়, এটা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ধস। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের ধারাবাহিকভাবে নীতি সুদহার বৃদ্ধি।