তেলের দাম কমেছে ৪ শতাংশ, তবে চাঙা হয়েছে ডলার

জ্বালানি তেল
ফাইল ছবি

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আবার কমতে শুরু করেছে। গতকাল মঙ্গলবার তেলের দাম ৪ শতাংশের বেশি কমেছে। ফলে তেলের দাম এখন জুলাইয়ের শেষভাগের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, চীনের অর্থনীতি নিয়ে মিশ্র সংবাদ আর ওপেকের তেল রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় বাজারের ভীতি কিছুটা দূর হয়েছে। সেই সঙ্গে ডলার শক্তিশালী হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর এই প্রথম গতকাল দিন শেষে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৮৪ ডলারের নিচে নেমে আসে। বিশ্ববাজারের অন্যতম মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত এই তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮১ দশমিক ৬১ ডলারে নেমে আসে। এক দিনে এই তেলের দাম কমেছে ব্যারেলপ্রতি ৩ দশমিক ৫৭ ডলার বা ৪ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কমে ৭৭ দশমিক ৩৭ ডলারে নেমে এসেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাপ্রবাহের দিকে চোখ রাখছেন, অর্থাৎ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় কি না, সেদিকে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের ভয় কেটে গেছে। এ ছাড়া ওপেকের তেল রপ্তানি বেড়ে যাওয়ার কারণেও তেলের দামে প্রভাব পড়েছে, অর্থাৎ সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে।

আগস্টের পর ওপেকের তেল রপ্তানি দিনে এক মিলিয়ন বা ১০ লাখ ব্যারেল বেড়েছে। রয়টার্স বলছে, এই মৌসুমে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের চাহিদা কমে যায়, সে জন্য বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

একদিকে সরবরাহ বৃদ্ধি এবং আরেক দিকে অক্টোবরে চীনের তেল আমদানি বাড়লেও পণ্য ও পরিষেবা রপ্তানি কমে যাওয়ায় চাহিদা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের মজুত ১২ মিলিয়ন বা ১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেল বেড়েছে। আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের সূত্রে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ তথ্য দিয়েছে।

ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আশা করছে, চলতি বছর দেশটিতে পেট্রোলিয়ামের ব্যবহার দৈনিক তিন লাখ ব্যারেল কমবে। তাদের আগের পূর্বাভাস ছিল, তেলের ব্যবহার বাড়বে দৈনিক এক লাখ ব্যারেল।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ চলতি বছর আর নীতি সুদহার বাড়াবে না—এই ধারণা পাকাপোক্ত হওয়ার পর মার্কিন ডলারের বিনিময় হার আরও জোরালো হয়েছে। ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও উন্নয়নশীল বা তেল আমদানিকারক দেশগুলোর সুবিধা হচ্ছে না। ডলারের বাড়তি দরের কারণে তাদের বেশি দাম দিয়ে তেল কিনতে হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার কমে এসেছে। তবে মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে নিয়ে আসতে ফেডকে আরও ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।