প্রস্তাবিত উপাত্ত সুরক্ষা আইন নিয়ে উদ্বেগ মার্কিন ব্যবসায়ীদের

বাংলাদেশে সফরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আজ বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়
ছবি: সংগৃহীত

প্রস্তাবিত উপাত্ত সুরক্ষা আইনের কিছু বিষয় নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের। তাঁরা মনে করছেন, উপাত্ত সুরক্ষা আইনের সর্বশেষ খসড়ায় কিছু সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। তবে এখনো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যেগুলোর প্রতি সরকারের অবিলম্বে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশে সফরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আজ বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপাত্ত সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া ডলারের দামে সীমা বেঁধে দেওয়ার প্রভাব ও আর্থিক খাতে সুশাসন এবং বিনিয়োগবান্ধব করব্যবস্থা, মেধাস্বত্ব আইন, ডিজিটাল অর্থনীতি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ছাড়াও সভায় ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট অতুল কাশ্যপ, আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উপাত্ত সুরক্ষা আইনের কিছু বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ রয়েছে জানিয়ে অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, উপাত্ত সুরক্ষা আইনের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে অ্যামচেম ও ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল (ইউএসবিবিসি) শিগগিরই তাদের প্রাসঙ্গিক সুপারিশ জমা দেবে।

অন্যদিকে ডলারের দামে সীমা বেঁধে দেওয়ায় আনুষ্ঠানিক মাধ্যমে প্রবাসী আয় কম আসছে বলে জানান অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। তিনি বলেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব কোম্পানি প্রবাসী আয় পাঠায়, তারা ব্যবসা হারাচ্ছে। এ ছাড়া অর্থ লেনদেন খাতে সরকারের পক্ষ থেকে সবার জন্য সমান সুযোগ ও সুশাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে আগ্রহী বলে জানান ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট অতুল কাশ্যপ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশও ব্যবসা পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করছে বলে আমাদের জানিয়েছে। আশা করি, পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে উভয় পক্ষ ভালো অবস্থানে যেতে পারব।’

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যে দেশের গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম খাতে বিনিয়োগ করেছে। এ ছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গ্যাস অনুসন্ধান, অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো, ওয়্যারহাউস, হিমাগার, শিপিং, বন্দর, উড়োজাহাজ, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ইত্যাদি খাতে বিনিয়োগ করতে পারে তারা।

সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে খুবই আগ্রহী বলে জানিয়েছেন। তাঁরা এ দেশে সরাসরি বিনিয়োগ করতে চান। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা কোনো কথা বলেননি বলে জানান তিনি।

তবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে কিছু কথা বলেছেন। তাঁরা কিছু বিষয়ে প্রশ্ন তুলে সেগুলোর সমাধান চেয়েছেন। যেমন করের বিষয়টা নিয়ে তাঁরা কথা বলেছেন। আমি তাঁদের বলেছি, নতুন ট্যারিফ পলিসিতে করের বিষয়টি উন্নতি করবে।’

ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু নতুন কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির প্রক্রিয়া চলছে, সেখানে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদেরকে প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন। সেটা হলে আমরা তাঁদের সব রকম সুবিধা দিতে পারব।’