ভ্রমণের জন্য টাকা জমানোর ১০ কৌশল
আসছে শীত মৌসুম। শীত মৌসুমে এ দেশের ঘোরাঘুরির সবচেয়ে ভালো সময়। সন্তানের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যান অনেকেই। তাই ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসকে পর্যটন মৌসুম হিসেবে বেশি বিবেচনা করেন সবাই। তবে এখন বছরজুড়েই ঘোরাঘুরি করেন অনেকে।
কিন্তু ঘোরাঘুরি করতে টাকা খরচ হয়। সামর্থ্য অনুসারে বাজেট ঠিক করা হয়। খরচ কমানোর জন্য অনেকে ব্যাকপ্যাক ট্যুর করেন। ননএসি বাসে যান, তুলনামূলক সস্তা হোটেলে থাকেন তাঁরা। আবার একটু আরাম-আয়েশে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন অনেকে।
অনেকে ব্যাংক থেকে ব্যক্তিগত ঋণ নিয়ে কিংবা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ভ্রমণ খরচের বড় অংশ জোগান দেন। কিন্তু দিন শেষে এতে খরচ বাড়ে।
এবার দেশে–বিদেশে ভ্রমণ করতে টাকা জমানোর কার্যকর কৌশল নিয়ে আলোচনা করা যাক।
১. ভ্রমণ বাজেট ঠিক করুন
প্রথমেই নির্ধারণ করুন আপনি কোথায় যাবেন। সেখানে কত দিন থাকবেন। আপনি সেখানে কী করবেন, কোথায় ঘুরবেন। তারপর আনুমানিক কত খরচ হবে। খরচের তালিকায় রাখবেন বাস, ট্রেন, বিমানসহ যাতায়াতের খরচ; খাবার, হোটেল, দর্শনীয় স্থান, কেনাকাটা ইত্যাদি। লক্ষ্য পরিষ্কার থাকলে সঞ্চয় করা অনেক সহজ হয়।
২. প্রতি মাসে আলাদা করে টাকা রাখুন
যেদিন আপনার বেতন হবে, সেদিনই ভ্রমণ ফান্ড বা তহবিলে টাকা রাখুন। যেমন প্রতি মাসে শুধু ২ হাজার, ৪ হাজার টাকা জমালেও বছর শেষে তা বড় অঙ্ক দাঁড়ায়।
৩. আলাদা হিসাব খুলতে পারেন
ভ্রমণের টাকা জমাতে আলাদা হিসাব খুলতে পারেন। এতে টাকা জমানোর তাগিদ বাড়ে। ব্যাংকের হিসাব খুলতে হবে, তা নয়। মোবাইল ব্যাংক হিসাবেও তা হতে পারে। মূল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আলাদা রাখলে খরচ করার প্রবণতা কমে।
৪. স্বয়ংক্রিয় সঞ্চয় চালু করুন
বেতনের টাকা নিজ হিসাবে আসার সঙ্গে সঙ্গে নির্দিষ্ট টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাদা হয়ে যাবে। এতে শৃঙ্খলা তৈরি হয়।
৫. অপ্রয়োজনীয় খরচ কমান
প্রতিদিন নানা ধরনের অপ্রয়োজনীয় খরচ হয়। যেমন, বাইরে প্রতিদিন চা-কফি না খাওয়া, অতিরিক্ত অনলাইন শপিং করা ইত্যাদি। এসব অপ্রয়োজনীয় খরচ বন্ধ করে তা ভ্রমণ তহবিলে রাখুন। এতে চাপ কমবে।
৬. পুরোনো জিনিসপত্র বিক্রি করে তহবিল বৃদ্ধি করুন
পুরোনো মোবাইল, গিটার, ক্যামেরা, ফিটনেস ব্যাগ—যা ব্যবহার করছেন না, বিক্রি করে দিন। এমনি বাসাবাড়িতে থাকা পুরোনো পত্রিকা বিক্রি করেও কিছু টাকা পাওয়া যায়। এ ধরনের টাকা সরাসরি ভ্রমণ তহবিলে দিন। এতে খরচ ছাড়াই সঞ্চয় বাড়বে।
৭. মাসিক খরচের হিসাব রাখুন
একটি খাতায় বা ডায়েরিতে মাসিক খরচের হিসাব রাখুন। তারপর দেখুন কোথায় খরচ কমানো যায়। খরচ কমালে তা ভ্রমণ তহবিলে রাখতে পারেন।
৮. অতিরিক্ত আয়ের উৎস তৈরি করুন
অনেকে ভ্রমণের খরচ জোগান নিয়মিত আয়ের বাইরে পার্টটাইম কাজ করে। যেমন ফ্রিল্যান্স কাজ (ডিজাইন, রাইটিং, ভিডিও এডিটিং), পার্ট-টাইম অনলাইন অফলাইন টিউশন, বাসায় বানানো (হোমমেড) খাবার বিক্রি ইত্যাদি। অতিরিক্ত আয়ের উৎস তৈরি করেও ভ্রমণের খরচ জোগাড় করা যায়।
৯. কম খরচে ভ্রমণ কখন করবেন
পিক সিজনে ট্রেন, বাস, বিমান টিকিটের দাম বেশি থাকে। আবার হোটেল খরচও বেশি।
অফ-সিজনে গেলে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয় করা সম্ভব। অন্যদিকে সাপ্তাহিক ছুটি বা সরকারি ছুটির পরিবর্তে কার্যদিবসে (অফিস খোলার দিন) ভ্রমণে গেলেও খরচ কমে।
১০. সঞ্চয়ের চ্যালেঞ্জ নিন
ভ্রমণ তহবিলের জন্য প্রতি মাসের বদলে প্রতি সপ্তাহে টাকা জমানোর চ্যালেঞ্জ নিন। এতে সহজে ও দ্রুত ভ্রমণের খরচ উঠে আসে।