কোম্পানি নিবন্ধনের সব খরচ পরিশোধ বিকাশ ও নগদে

নতুন কোম্পানি খোলা থেকে শুরু করে বিদ্যমান কোম্পানির বিলুপ্তি পর্যন্ত অনেক কাজেই যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের কার্যালয় (আরজেএসসি) ফি বা মাশুল নিয়ে থাকে। বর্তমানে আরজেএসসি বিভিন্ন কাজের ফি জমা নেয় ইবিএল, ওয়ান ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে। এ ছাড়া সিটি ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সব ফি জমা দেওয়া যায়।

এবারে গ্যাস-বিদ্যুতের বিলের মতো এসব ফি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (এমএফএস) মাধ্যমে জমা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ফি জমা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরজেএসসি। এ নিয়ে গত ৪ নভেম্বর ও ২ ডিসেম্বর দুটি বৈঠক হয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিকে কারিগরি দিক নিয়ে আবার বৈঠক হবে। আরজেএসসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে আরজেএসসির নিবন্ধক মো. মকবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যবসায় সহজীকরণের অংশ হিসেবে উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। ফলে ঘরে বসেই কেউ আরজেএসসি থেকে সেবা নিতে পারবেন। আমরা চাচ্ছি আগামী জানুয়ারির মধ্যেই এটা চালু করতে।’

‘ব্যবসায় সহজীকরণের অংশ হিসেবে উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। ফলে ঘরে বসেই কেউ আরজেএসসি থেকে সেবা নিতে পারবেন। আমরা চাচ্ছি আগামী জানুয়ারির মধ্যেই এটা চালু করতে।’
মো. মকবুল হোসেন, আরজেএসসির নিবন্ধক

দেশে বর্তমানে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩২টি প্রাইভেট, ৩ হাজার ৫৩২টি পাবলিক এবং ৯৩২টি বিদেশি কোম্পানি রয়েছে। এ ছাড়া সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন আইনের অধীনে রয়েছে অনেক সমিতি। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আড়াই লাখ হবে। বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে নতুন সেবা চালু করা হলে সবাই উপকৃত হবে বলে জানান মকবুল হোসেন।

সাধারণত নামের ছাড়পত্র, নিবন্ধন, রিটার্ন ফাইলিং, প্রত্যয়িত অনুলিপি, কোম্পানি অবসায়ন ইত্যাদি বিষয়ে আরজেএসসি ফি নেয়। একেকটার ফি একেক রকম।

আরজেএসসি সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে সব ধরনের ফি থেকে আরজেএসসি আয় করেছে ১৬০ কোটি টাকা। কোভিড-১৯ চলাকালে চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে সংস্থাটি আয় করেছে ৬০ কোটি টাকা।

আরজেএসসি সূত্রে জানা গেছে, বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও কিছু আলোচনা এখনো বাকি আছে। যেমন আরজেএসসিতে গ্রাহকসেবার ফিগুলো মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), স্ট্যাম্প শুল্ক ও নগদ—এই তিনটি খাতে জমা হয়। কিছু ফি এক বা দুই খাতেও জমা হয়। মোটা দাগে আলোচনা হলেও খাত অনুযায়ী এগুলোকে আলাদা করতে হবে।

বিকাশ বা নগদ কত করে মাশুল পাবে, সেই সিদ্ধান্তও হয়নি।

আরজেএসসির ২ ডিসেম্বরের বৈঠকের কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, নগদের কার্যনির্বাহী পরিচালক মো. শাফায়েত আলম বলেছেন, নির্দিষ্ট পরিমাণ সেবা মাশুল নির্ধারণ করে শিগগিরই তাঁরা আরজেএসসিকে জানাবেন।

নগদ সম্প্রতি আরজেএসসিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, তাদের ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা পয়েন্ট রয়েছে। গ্রাহকসংখ্যা তিন কোটি ছাড়িয়েছে। আর ‘পরিচয়’ নামক একটি প্রযুক্তির মাধ্যমে এক মিনিটেই নগদ অ্যাকাউন্ট করা যায়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে দ্রুত সেবা দিতে নগদ বদ্ধপরিকর। ফলে আরজেএসসির সব ধরনের বিল ও ফি নগদের মাধ্যমে নেওয়া সম্ভব হবে।

বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, আরজেএসসির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, আরও হবে। বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে আরজেএসসিতে যাতে সব ধরনের ফি জমা দেওয়া যায়, সে জন্য বিকাশ প্রস্তুত। তিনি জানান, বর্তমানে তাঁদের গ্রাহক ৪ কোটি ৯০ লাখ এবং এজেন্ট পয়েন্ট ২ লাখ ৪০ হাজার।