ব্যাংক হিসাব খুলতে কত টাকা প্রয়োজন

ব্যাংকের শাখায় লেনদেন
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করা আর্থিক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এর আগে আমরা জানিয়েছিলাম, কীভাবে ব্যাংক হিসাব খুলবেন। আজ আমরা তুলে ধরব, ব্যাংক হিসাব খুলতে ঠিক কত টাকা প্রয়োজন হয়।

পুরোনো অনেক হিসাবধারী বলতে পারেন, হিসাব খুলতে আবার টাকা লাগবে কেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক ব্যাংক সেবার মান উন্নত করেছে। অনেকে আধুনিক হয়েছে। এ জন্য ব্যাংকগুলো হিসাব খুলতে টাকা জমার পরিমাণও বাড়িয়েছে। আবার অনেক ব্যাংক চায় না, কম আয়ের নাগরিকেরা তাদের ব্যাংকে যাক। একটি ব্যাংক পরিচালনায় তাদের যে খরচ হয়, তাতে কম আয়ের মানুষদের সেবা দিলে লোকসানে পড়তে হয়।

তবে বাংলাদেশে মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাব খোলা যায় একেবারে বিনা মূল্যে। যদিও ব্যাংক হিসাব ও এমএফএস হিসাব এক নয়। কারণ, এমএফএস মূলত টাকা স্থানান্তরের প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে কিছু কেনাকাটা ও বিল পরিশোধ করা যায়। এসব হিসাবে আলাদাভাবে কোনো সঞ্চয় স্কিম নেই। ফলে সঞ্চয়ের প্রবণতা গড়ে তুলতে ব্যাংক হিসাবের বিকল্প নেই। আবার আর্থিক জ্ঞান বাড়াতেও ব্যাংক হিসাব প্রয়োজন।

বাংলাদেশের দি সিটি ব্যাংকে হিসাব খুলতে ১০ হাজার, ব্র্যাক ব্যাংকে রাজধানীর শাখায় খুলতে ৫০ হাজার ও বাইরের শাখায় হিসাব খুলতে প্রয়োজন হয় ৫ হাজার টাকা।

আমরা শুধু সাধারণ সঞ্চয়ী হিসাব খোলার তথ্য তুলে ধরব। বিদেশি খাতের এইচএসবিসিতে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে প্রয়োজন হয় ১০ লাখ টাকা ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ১ লাখ টাকা। আর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে প্রয়োজন হয় ১০ হাজার টাকা।

বাংলাদেশের দি সিটি ব্যাংকে হিসাব খুলতে ১০ হাজার, ব্র্যাক ব্যাংকে রাজধানীর শাখায় খুলতে ৫০ হাজার ও বাইরের শাখায় হিসাব খুলতে প্রয়োজন হয় ৫ হাজার টাকা।

একইভাবে এবি ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে ১০ হাজার টাকা, ওয়ান, ইস্টার্ন ও আইএফআইসি ব্যাংকে ৫ হাজার টাকা প্রয়োজন হয়। নতুন প্রজন্মের মিডল্যান্ড ব্যাংক হিসাব খুলতে নেয় ২ হাজার টাকা। এর বাইরে অন্য ব্যাংকগুলোতে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা জমা দিয়ে সঞ্চয়ী হিসাব খোলা যায়। এর বাইরে চাকরিজীবীদের বেতনের জন্য ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকায় হিসাব খোলার সুযোগ দেয় ব্যাংকগুলো।
তবে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো জানায়, হিসাব খোলার সময় টাকার প্রয়োজন হলেও একদিন পরেই তা তুলে নেওয়া যায়। গুটিকয় ব্যাংকে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা আবশ্যিকভাবে জমা রাখতে হয়।

এসব হিসাবের বাইরে ব্যাংকগুলোতে ১০ থেকে ১০০ টাকা জমা দিয়ে কৃষক, ছাত্র, মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র জীবনবিমা গ্রহীতার হিসাব খোলার সুযোগ রয়েছে। এসব মূলত সরকারি ব্যাংককেন্দ্রিক। তবে খুদে শিক্ষার্থীদের জন্য হিসাব খোলার সুযোগ রেখেছে সব ব্যাংক।

বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক মাত্র ৫০ শতাংশ মানুষের ব্যাংক হিসাব আছে। আর বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাব ধরলে ৭০ শতাংশ মানুষ আর্থিক সেবার আওতায় এসেছে।

একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, হিসাব খোলার সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা নেওয়া হয়, মূলত হিসাবটি নিয়মিত রাখার জন্য। যদি বিনা মূল্যে কেউ হিসাব খুলতেন, তাহলে হিসাবের খবর রাখতেন না। এতে ব্যাংকগুলোতে নথিপত্রের বোঝা তৈরি হতো। এ কারণে ন্যূনতম জমার বিধান রাখা হয়েছে। তবে কিছু ব্যাংক নির্দিষ্ট শ্রেণির গ্রাহকদের সেবা দিতে বেশি টাকা জমার নিয়ম চালু করেছে।

বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক মাত্র ৫০ শতাংশ মানুষের ব্যাংক হিসাব আছে। আর বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাব ধরলে ৭০ শতাংশ মানুষ আর্থিক সেবার আওতায় এসেছে।