মুজিব বর্ষের সেরা করদাতার সম্মাননা কাউছ মিয়ার হাতে

মুজিব বর্ষের সেরা করদাতা মো. কাউছ মিয়ার (কালো কোট পরা) হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দিচ্ছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। গতকাল সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর কার্যালয়ে
ছবি: সংগৃহীত

মুজিব বর্ষের সেরা করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী মো. কাউছ মিয়া। গতকাল শুক্রবার সকালে তাঁর হাতে সম্মাননা তুলে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ উপলক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এনবিআর তাঁকে এই সম্মাননা দিয়েছে। গতকাল এনবিআর কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে সম্মাননা তুলে দেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

মুজিব বর্ষের সেরা করদাতা হওয়ার আগে থেকে কয়েক বছর ধরেই কাউছ মিয়া সেরা করদাতার সম্মাননা পেয়ে আসছেন। তিনি ৬৩ বছর ধরে কর দিয়ে আসছেন। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন তিনি। গতকাল এনবিআরের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৬-১৭ কর বছরে ঢাকা জেলার কর বাহাদুর পরিবার হিসেবে তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। রাজস্ব প্রদানে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ধারাবাহিকভাবে ১৪ বার রাজস্ব পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

এনবিআর জানিয়েছে, কাউছ মিয়া ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ আগস্ট চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কিশোর বয়সেই তিনি চাঁদপুর শহরে ব্যবসা শুরু করেন। সে সময় তিনি ১৮টি ব্র্যান্ডের বিস্কুট, সাবান ও সিগারেটের এজেন্ট ছিলেন। ২০ বছর চাঁদপুরে ব্যবসা করার পর ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জে এসে ব্যবসা শুরু করেন কাউছ মিয়া। বর্তমানে তিনি ৪০টির বেশি ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন।

কাউছ মিয়ার মূল ব্যবসা তামাক বেচাকেনা। রংপুরে তামাক কিনে সেখানেই বিক্রি করেন। একবার তিনি আমদানির ব্যবসায় নামতে লাইসেন্স নিয়েছিলেন। এ ব্যবসায় কারসাজি না করলে টিকে থাকা মুশকিল, এটা চিন্তা করে আমদানির ব্যবসা ছাড়েন। নদীপথে পণ্য পরিবহনের জন্য বেশ কিছু কার্গো জাহাজ আছে কাউছ মিয়ার। এই ব্যবসা তাঁর ছেলেরা দেখাশোনা করেন।

১৯৫৮ সাল থেকে কেন কর দেওয়া শুরু করলেন, এর ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন। ২০১৯ সালে এনবিআরের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘আগে টাকাপয়সা এখানে-সেখানে রাখতাম। এতে নানা ঝামেলা ও ঝুঁকি থাকত। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দিয়ে “ফ্রি”হয়ে গেলাম। এরপর সব টাকাপয়সা ব্যাংকে রাখতে শুরু করলাম। হিসাব-নিকাশ পরিষ্কার করে রাখলাম।’ ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এক নম্বর করদাতা হয়েছিলেন কাউছ মিয়া।

এনবিআর বলছে, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ না করে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থ ও সম্পদ দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিয়মিত কর প্রদান করে আসছেন।