সরকারি কর্মকর্তারা যেসব ভাতায় করছাড় পান

সরকারি চাকরিজীবীরা নানা ধরনের ভাতা পান। সব ভাতার ওপর কর হয় না। আবার সব ভাতা করমুক্ত নয়। কিছু কিছু ভাতা করমুক্ত থাকে। তাই বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন প্রস্তুত করার আগে কোন কোন ভাতায় কর নেই, তা জেনে নেওয়া ভালো। যেমন দায়িত্ব ভাতা, নববর্ষ ভাতা—এসবের ওপর কর নেই। কোথায় কর আছে,কোথায় কর নেই, তা জানা না থাকলে বিপাকে পড়তে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ লাখ সরকারি কর্মকর্তা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেন। অনেকেই জানেন না, কোথায় করছাড় আছে।

এবার দেখা যাক, সরকারি চাকরিজীবীরা কোথায় করছাড় পান। প্রথমেই আসি বাড়িভাড়ায়। মূল বেতনের ৫০ শতাংশ বা তিন লাখ টাকা হলে তাতে কর দিতে হবে না। চিকিৎসা ভাতার ক্ষেত্রেও মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কর নেই। অবশ্য বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতায় এমন ছাড় সব চাকরিজীবী করদাতা পান। এ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের করমুক্ত ভাতাগুলোর তালিকায় আরও আছে বৈশাখী ভাতা, শিক্ষা–সহায়ক ভাতা, দায়িত্ব ভাতা, পাহাড়ি ভাতা, ধোলাই ভাতা, টিফিন ভাতা, শ্রান্তি–বিনোদন ভাতা ও টিএ-ডিএ।

অন্যদিকে, সরকারি কর্মকর্তাদেরও করযুক্ত আয়ের তালিকায় আছে মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও সম্মানী ভাতা। অবশ্য মূল বেতন ও উৎসব ভাতাই তাঁদের প্রধানতম আয় খাত।
সরকারি কর্মকর্তারা চাইলে তাঁদের কর কমাতে পারেন। বিনিয়োগ করে তাঁরা বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত নিতে পারেন। অবশ্য কিছু ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ হয়ে যায়। যেমন ভবিষ্য তহবিলে চাঁদা। এ ছাড়া কল্যাণ তহবিলে চাঁদা ও গোষ্ঠী বিমা তহবিলে চাঁদা দিলেও বিনিয়োগ হিসেবে ধরা হয়। পরে কর রেয়াত পাওয়া যাবে।

সরকারি কর্মকর্তারাসহ সবার জন্য আয়কর রেয়াতের কিছু সাধারণ খাত আছে। যেমন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ, বিমা পলিসি, ডিপিএস (বছরে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত), শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ইত্যাদি।

চলতি অর্থবছরে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার শেষ সময়। এই সময়ের মধ্যে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা না দিলে জরিমানার মুখে পড়তে হবে। অবশ্য যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে দুই মাস সময় বাড়ানো যায়। আয়কর অধ্যাদেশে এখন সময় বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। তবে গতবার করোনার মতো জাতীয় দুর্যোগের কারণে রিটার্ন জমার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছিল।