শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি

গাজীপুরে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও অনতিবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও শ্রমিক সংগঠন ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি)।

বিজিএমইএ ও আইবিসি আজ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে সরকারের প্রতি এ অনুরোধ জানায়। গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠায় বিজিএমইএ। এতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার বিকেলে বিজিএমইএ কার্যালয়ে সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গে আইবিসির নেতাদের বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিজিএমইএ ও আইবিসির নেতাদের বৈঠকে শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শোকপ্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিএমইএ থেকে নিন্দা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়াত শহিদুল ইসলামের ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। শ্রমিকনেতার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন বিজিএমইএর সভাপতি।

বিবৃতিতে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, সহসভাপতি এস এম মান্নান ও মো. নাসির উদ্দিন, পরিচালক হারুন অর রশিদ ও সাবেক পরিচালক আ ন ম সাইফুদ্দিন; আইবিসির সভাপতি আমিরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন আহমেদ; বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার; বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক লীগের সভাপতি জেড এম কামরুল আনামসহ আরও পাঁচজন শ্রমিকনেতা সই করেন।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা না দেওয়ায় ২৫ জুন রাত সাড়ে নয়টার দিকে টঙ্গীর সাতাইশ বাগানবাড়ি এলাকার প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানায় যান শহিদুল ইসলাম। কারখানাটির মালিকপক্ষের সঙ্গে বসলেও বিষয়টির সুরাহা না হওয়ায় পরদিন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে কারখানা থেকে বের হয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর শহিদুল ইসলামের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় গাজীপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শহিদুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরদিন ২৬ জুন টঙ্গী পশ্চিম থানায় হত্যা মামলা করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি কল্পনা আক্তার। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এদিকে আজ গাজীপুরে প্রয়াত শহিদুল ইসলামের বাড়িতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান অংশ নেন। তিনি শহিদুল ইসলামের কবর জিয়ারত করেন।

এ নিয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার প্রথম আলোকে বলেন, বিজিএমইএর সভাপতি শহিদুলের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে তিন লাখ টাকার চেক প্রদান করেছেন। ভবিষ্যতে আরও সহায়তা করারও আশ্বাস দেন তিনি।