বাজার তদারকিতে জেলা পর্যায়ে টাস্কফোর্স গঠন, কর্মকর্তাদের সঙ্গে থাকবেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার পরিস্থিতি ও সরবরাহশৃঙ্খল তদারক ও পর্যালোচনার জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। জেলা পর্যায়ে এসব টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যা দেশের সব জেলা পর্যায়ে আলাদাভাবে কাজ করবে।
আজ সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিটি জেলায় বিশেষ এ টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং সদস্যসচিব হিসেবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ছাড়া টাস্কফোর্সে সদস্য হিসেবে থাকবেন জেলার একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বা উপযুক্ত প্রতিনিধি, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা উপযুক্ত প্রতিনিধি, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বা উপযুক্ত প্রতিনিধি, কৃষি বিপণন কর্মকর্তা বা জ্যেষ্ঠ কৃষি বিপণন কর্মকর্তা, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি এবং দুজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। টাস্কফোর্স প্রয়োজনে সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে সম্প্রতি বাজারে বিভিন্ন নিত্যসামগ্রীর দাম আরও এক দফা বেড়েছে। যেমন কাঁচা মরিচের কেজি হয়েছে ৪০০ টাকা, প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১৮০-১৯০ টাকা। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগির মতো পণ্যসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দামও বেড়েছে। এ অবস্থায় নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার পরিস্থিতি তদারকিতে জেলায় জেলায় টাস্কফোর্স গঠন করল।
এর আগে গতকাল রোববার এক ফেসবুকে স্ট্যাটাসে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানোর কথা উল্লেখ করে বলেন, অনেকগুলো পণ্য ডিউটি ফ্রি করার পরও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। বাজার মনিটরিংয়ে টাস্কফোর্স গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। দ্রুতই মাঠে নামবে টাস্কফোর্স। আসিফ মাহমুদের এমন বার্তা দেওয়ার পরদিনই টাস্কফোর্স গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি হলো।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই টাস্কফোর্সের (প্রতিটি জেলায়) সদস্যরা নিয়মিত বিভিন্ন বাজার, বৃহৎ আড়ত, গোডাউন, কোল্ড স্টোরেজ ও সরবরাহশৃঙ্খলের অন্যান্য স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন। তাঁরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার বিষয়টি তদারক করবেন।
এ ছাড়া পণ্যের উৎপাদন, পাইকারি ও ভোক্তা পর্যায়ে যাতে দামের পার্থক্য ন্যূনতম পর্যায়ে থাকে, তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে টাস্কফোর্স। একই সঙ্গে টাস্কফোর্সের সদস্যরা সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন।
প্রতিদিনের তদারকি শেষে একটি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষে পাঠাবে টাস্কফোর্স। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া প্রতিবেদন সংকলন ও পর্যালোচনা করে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন দেবে।