ঢাকায় ১২ টাকায় ডিম বিক্রি শুরু করেছেন খামারিরা

প্রান্তিক খামারিদের অনুসরণ করে বড় ৫–৬টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান সারা দেশে প্রতিটি ডিম ১২ টাকায় বিক্রি করতে পারে। তাতে ডিমের বাজারে অস্থিরতা কমে আসবে বলে মনে করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) চত্বরে ভোক্তাদের কাছে সরাসরি ডিম বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় সফিকুজ্জামান করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে খোলাবাজারে ডিম বিক্রির আহ্বান জানান। ভোক্তা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) ১২ টাকায় ডিম বিক্রির এই কার্যক্রম শুরু করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। তাতে আমাদের সহযোগিতা লাগলে আমরা সহযোগিতা করব।’

ডিমের দাম বাড়ার পেছনে একটি সিন্ডিকেট কাজ করে, এমন অভিযোগ প্রায়ই উত্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের পর বাজার সিন্ডিকেটের বিষয়ে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘সিন্ডিকেট কারা করছে, এটা সবারই জানা। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে করপোরেটদের এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে সম্ভব না। ভোক্তা ও সরবরাহকারীদের সহায়তা ছাড়া বাজার তদারকি করে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কারণ, হাতবদলের সময় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে যায়।’

ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ১২ টাকায় ডিম বিক্রির পরিকল্পনা থাকলেও শুরুর দিন টিসিবি চত্বরের পাশাপাশি হাতিরপুল বাজারে ডিম বিক্রির কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ট্রাকে করে বিক্রি কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন প্রান্তিক খামারিরা। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৩০টি পর্যন্ত ডিম কিনতে পারছেন।

প্রান্তিক খামারিরা কারওয়ান বাজারের পাশাপাশি ঢাকার আরও যেসব স্থানে ডিম বিক্রির অনুমতি পেয়েছে, সেগুলো হলো হাতিরপুল বাজার, শান্তিনগর বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার, কৃষি মার্কেট, শ্যামলী, নতুন বাজার, সেগুনবাগিচা, সচিবালয়, উত্তর বাড্ডা বাজার, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, জিগাতলা, শংকর বাসস্ট্যান্ড, মতিঝিল, উত্তরা, মিরপুর, রামপুরা বাজার, নিউমার্কেট ও কামরাঙ্গীরচর।

অনুষ্ঠানে টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান বলেন, সরকারের নির্দেশনায় টিসিবি সারা দেশে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে। এর সঙ্গে প্রান্তিক খামারিদের এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। সরকার ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণের আগে সব পক্ষের লাভের হিসাব করেই নির্ধারণ করেছে। এই দাম যৌক্তিক। কিন্তু সাধারণ মানুষ কিনতে পারছেন না। যে জন্য প্রান্তিক খামারিরা নির্ধারিত দামে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন। একইভাবে এ খাতে যারা বড় প্রতিষ্ঠান আছে, তারাও এগিয়ে আসতে পারে। প্রান্তিক খামারিরা পারলে করপোরেট প্রতিষ্ঠানও পারবে।

বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘সরকার উৎপাদন ও খুচরা পর্যায়ে যে দাম ঠিক করে দিয়েছে, তা যৌক্তিক। কিন্তু সেটি বাস্তবায়িত হচ্ছে না। যে জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা চাই, ভোক্তা ও খামারিদের মধ্যে দূরত্ব কমে আসুক। যেখানে ভোক্তা ন্যায্যমূল্য ডিম খাবে এবং খামারি ন্যায্যমূল্য পাবে। দেশে পর্যাপ্ত ডিম আছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিম আমদানির প্রয়োজন নেই।’