ছয় দফায় ভারত থেকে এল ৬৩০ টন আতপ চাল 

পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় পাথর। বেশ কয়েক বছর পর বন্দরটি দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি মিলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই বন্দর দিয়ে ছয় দফায় ৬৩০ টন আতপ চাল আমদানি হয়েছে। গত ২৬ নভেম্বর থেকে গত ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব চাল বন্দরটিতে এসে পৌঁছেছে।

বন্দরটির ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ জানান, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রহর ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে চট্টগ্রামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সামসুল আলম এসব চাল আমদানি করেছে। গত ২৬ নভেম্বর থেকে এই চাল আমদানি শুরু হয়। 

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সামসুল আলমের প্রতিনিধি মো. ছাদেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৮ সালে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমরা ১৪ হাজার টন আতপ চাল আমদানি করেছিলাম। এরপর থেকে এই বন্দর দিয়ে আর চাল আমদানি হয়নি। এবার অনুমতি পাওয়ার পর আমরা দুই হাজার টন চাল আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলেছি। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬৩০ টন চাল এসেছে।’ 

 মো. ছাদেক আরও জানান, এখন পর্যন্ত আমদানি হওয়া চাল প্রতি টন ৩৬৬ থেকে ৩৮৫ মার্কিন ডলার দামে আমদানি করা হয়েছে। ২৫ কেজির প্রতি বস্তা চাল দেশে ১ হাজার ৩১০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩২০ টাকায় পাইকারিতে বিক্রি করা হচ্ছে। ভারত থেকে আমদানি করা এসব চাল ঢাকাসহ টেকনাফ, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। 

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ ও সংগনিরোধ কেন্দ্রের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. নুর হাসান বলেন, ‘আমদানি করা খাদ্যপণ্যের সঙ্গে কোনো কোয়ারেন্টিন পেস্ট আসছে কি না, সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। আমদানি করা এসব চালও আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি। সেগুলো উদ্ভিদের রোগবালাইমুক্ত ছিল।’

স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর নেপালের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু হয়। এরপর ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারি এই স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এ বন্দর দিয়ে ভারতে যাত্রী পারাপার শুরু হয়। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভুটানের সঙ্গে শুরু হয় পণ্য আমদানি-রপ্তানি।

এই বন্দর দিয়ে দিনে ২০০ থেকে ২৫০টি ট্রাকে পণ্য আমদানি এবং ৫০ থেকে ১০০টি ট্রাকে পণ্য রপ্তানি করা হয়। বর্তমানে এই বন্দর দিয়ে আমদানি করা পণ্যের ৯৫ শতাংশ পাথর। এসব পাথর ভারত ও ভুটান থেকে আমদানি করা হয়। এ ছাড়া নেপাল থেকে চিটাগুড় ও মসুর ডাল এবং ভারত থেকে মাঝেমধ্যে চাল ও পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে।

অন্যদিকে এই বন্দর দিয়ে রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে গার্মেন্টের ঝুটকাপড়, পাট, প্রাণের খাদ্যপণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, ব্যাটারি, ওষুধ, পিভিসি ডোর, জুট ইয়ার্ন, ক্লিয়ার ফ্লোট গ্লাস ও টিস্যু পেপার। এসব পণ্য ভারত ও নেপালে রপ্তানি করা হয়।