সাক্ষাৎকার

স্মার্ট রেফ্রিজারেটর কাজ করে ব্যবহারকারীর অভ্যাস বুঝে

একসময় রেফ্রিজারেটর ছিল কেবল খাবার সংরক্ষণের একটি যন্ত্র মাত্র। সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তির অগ্রগতিতে রেফ্রিজারেটরও এখন হয়ে উঠেছে ‘স্মার্ট’। এখনকার স্মার্ট রেফ্রিজারেটরগুলো শুধু খাবার ঠান্ডা বা সতেজই রাখে না, বরং ব্যবহারে এনেছে নতুন মাত্রা। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ, খাবারের ধরন বুঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ যুক্ত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও। এসব ফিচার দৈনন্দিন জীবনে সাধারণ মানুষকে কীভাবে সুবিধা দিচ্ছে? জীবনযাত্রার ঠিক কোন কোন দিক বদলে দিচ্ছে স্মার্ট রেফ্রিজারেটর? এসব বিষয়েই প্রথম আলো ডটকমের সঙ্গে কথা বলেছেন স্যামসাং ইলেকট্রনিকস বাংলাদেশের কনজ্যুমার ইলেকট্রনিকস বিভাগের ডিরেক্টর ও হেড অব বিজনেস শাহরিয়ার বিন লুৎফর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দিনার হোসাইন হিমু

প্রথম আলো:

বর্তমানে ‘বিস্পোক এআই রেফ্রিজারেটর’ বিষয়টি বাজারে বেশ প্রচলিত। বিস্পোক এআই বলতে আমরা কী বুঝি?

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: ‘বিস্পোক এআই’ রেফ্রিজারেটরকে সহজভাবে বলা যেতে পারে ইন্টেলিজেন্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স। এ রেফ্রিজারেটরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। এতে যেমন ইন্টারনেট সংযোগ থাকে, তেমনি বিশেষ সেন্সরও থাকে, যা ব্যবহারকারীর অভ্যাস অনুযায়ী পারসোনালাইজড সেবা দিতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এর এআই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনার্জি মোড সামঞ্জস্য করে, যা খাবার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে উন্নত সমাধান নিশ্চিত করে।

প্রথম আলো:

সাধারণ রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজের তুলনায় স্মার্ট ফ্রিজে কী ধরনের বাড়তি ফিচার বা সুবিধা থাকে?

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: ওয়াই-ফাই সংযোগের মাধ্যমে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ, অ্যাপের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবহার মনিটরিং, স্বয়ংক্রিয় এনার্জি সেভিং মোড, রক্ষণাবেক্ষণ-সম্পর্কিত নোটিফিকেশন এবং ইন্টেরিয়র স্পেস ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবনী প্রযুক্তিসহ অনেক বাড়তি ফিচার থাকে। যেমন আমাদের সর্বাধুনিক ‘বিস্পোক এআই’ রেফ্রিজারেটরগুলো আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে রেফ্রিজারেটরের জগতে নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছে।

প্রথম আলো:

কোন কোন এআই ফিচার বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে? ভবিষ্যতে কী কী পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে?

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে রিমোট কন্ট্রোল, এনার্জি মনিটরিং, স্মার্ট ডায়াগনস্টিক ও স্মার্ট পুশ নোটিফিকেশন। ভবিষ্যতে এআই আরও উন্নত হয়ে খাবার অপচয় হ্রাস, সংরক্ষণের মেয়াদ সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়া এবং রান্নার তালিকা অনুযায়ী উপকরণ সংরক্ষণের পরামর্শ দিতেও সক্ষম হবে।

স্যামসাংয়ের ‘বিস্পোক এআই’ রেফ্রিজারেটরগুলো আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে রেফ্রিজারেটরের জগতে নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছে
ছবি: স্যামসাংয়ের সৌজন্যে
প্রথম আলো:

ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ফ্রিজ ব্যবহারে কী ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়?

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: ইন্টারনেট সংযোগ থাকায় আপনি বাইরে থেকেও রেফ্রিজারেটর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। যেমন ছুটিতে থাকাকালে ফ্রিজের মোড পরিবর্তন, তাপমাত্রা পরীক্ষা, বিদ্যুৎ ব্যবহার মনিটরিং এবং স্মার্ট ডায়াগনস্টিক—সবকিছুই মোবাইল থেকেই করা সম্ভব।

প্রথম আলো:

স্মার্ট ফ্রিজ কি বাংলাদেশি বাজারের জন্য উপযুক্ত? সাধারণ মানুষ কীভাবে এগুলো গ্রহণ করছে?

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: অবশ্যই উপযুক্ত। বাংলাদেশের মানুষ এখন প্রযুক্তি সম্পর্কে অনেক সচেতন। তাঁরা কেবল সাধারণ সমাধান নয়, স্মার্ট সমাধান খোঁজেন। স্যামসাংয়ের বিস্পোক এআই ফ্রিজগুলো আমাদের গ্রাহকদের চাহিদা ও প্রয়োজন বিবেচনায় বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। আমরাও দারুণ সাড়া পাচ্ছি।

প্রথম আলো:

স্মার্ট রেফ্রিজারেটর খাদ্য সংরক্ষণে কী কী বাড়তি সুবিধা দেয়?

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: স্মার্ট রেফ্রিজারেটরে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে খাবারের ধরন অনুযায়ী আলাদা শীতলীকরণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। ফলে সবজি, মাছ, মাংস ইত্যাদি দীর্ঘ সময় সতেজ থাকে।

প্রথম আলো:

বিদ্যুৎ সাশ্রয়, দাম ও রক্ষণাবেক্ষণের দিক বিবেচনায় স্মার্ট ফ্রিজ কতটা কার্যকর?

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: স্মার্ট রেফ্রিজারেটরগুলো এআইভিত্তিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খরচ কমিয়ে আনে। বাজারে চাহিদা বাড়ার ফলে দামও ধীরে ধীরে কমছে। স্যামসাংয়ের স্মার্টথিংস এআই প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর ব্যবহারের অভ্যাস বিশ্লেষণ করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের তথ্য দেয় এবং নির্ধারিত সীমার বেশি হলে নোটিফিকেশন পাঠায়। ফলে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করা সম্ভব। তা ছাড়া স্মার্টথিংস অ্যাপের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ অনেক সহজ হয়।

প্রথম আলো:

আপনাদের রেফ্রিজারেটর নিয়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: অভূতপূর্ব! বিশেষ করে স্যামসাং ‘বিস্পোক এআই’ রেফ্রিজারেটরের ফ্ল্যাট ডোর, প্রিমিয়াম গ্লাস ডিজাইন এবং মেটালিক টাচ ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। এই নতুন লাইনআপে পাঁচটি ভিন্ন ক্যাপাসিটিতে বিভিন্ন রঙের রেফ্রিজারেটর রয়েছে, ফলে ক্রেতারা তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিতে পারছেন। পাশাপাশি স্পেসম্যাক্স প্রযুক্তি থাকায় অন্যান্য ব্র্যান্ডের একই আকারের রেফ্রিজারেটরের তুলনায় আমাদের রেফ্রিজারেটরে বেশি খাবার সংরক্ষণ করা যায়। এ ছাড়া ক্রেতারা এখন পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির দিকেও ঝুঁকছেন, যা আমাদের রেফ্রিজারেটরগুলোতে নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রথম আলো:

প্রথম আলো ডটকম আয়োজিত রেফ্রিজারেটর মেলায় অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে পাঠক ও ক্রেতাদের উদ্দেশে কী বলবেন?

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: এই মেলার মাধ্যমে আমরা প্রথম আলোর পাঠকদের কাছে আমাদের রেফ্রিজারেটরের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছি। আপনার রান্নাঘরের সব প্রয়োজন মেটাতে স্যামসাংয়ের নতুন এই লাইনআপ হতে পারে আপনার সেরা সঙ্গী। এর মাধ্যমে আপনি আপনার প্রাত্যহিক জীবনকে আরও সহজ ও স্মার্ট করে তুলতে পারবেন।

প্রথম আলো:

ধন্যবাদ।

শাহরিয়ার বিন লুৎফর: আপনাকেও ধন্যবাদ।