অর্থনীতি এখন দুই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অর্থনীতি দুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটি। এই চ্যালেঞ্জ দুটি হলো, মূল্যস্ফীতির অব্যাহত উচ্চহার ও বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের ক্রমাগত অবক্ষয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কমিটি আরও জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে মুদ্রা সংকোচন নীতিমালা অব্যাহত রাখা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটির (এমপিসি) এক বৈঠকে আজ বুধবার এসব কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এত যোগ দেন ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, অর্থনীতিবিদ সাদিক আহমেদ, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা পরিষদের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. এজাজুল ইসলাম। এ ছাড়া ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

দেশি ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ ও পূর্বাভাস নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির বর্তমান পরিস্থিতি, ব্যাংকিং খাতের মুদ্রা ও তারল্য পরিস্থিতি, সুদহার করিডরের অবস্থা, বহিস্থ খাত থেকে আসা চাপ এবং বিনিময় হার পরিস্থিতি নিয়েও এতে আলোচনা হয়।

দুটি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে এমপিসির বৈঠকে জানানো হয় যে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকার মূল্যস্ফীতি কমানো, বিনিময় হার স্থিতিশীল করা ও রিজার্ভের অবক্ষয় রোধে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু তারপরও মূল্যস্ফীতি অনমনীয়ভাবে উঁচুতে রয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার মজুত প্রত্যাশিত পর্যায়ে উন্নীত করা যাচ্ছে না।

বৈঠকে ক্রলিং পেগ চালুর বিষয়ে জানানো হয়। এ ছাড়া ঋণের সুদহার নির্ধারণে বর্তমানে যে স্মার্ট পদ্ধতি চালু রয়েছে, তা বিলুপ্ত করে বাজারভিত্তিক সুদহার চালুর বিষয়েও বৈঠকে জানানো হয়।

মূল্যস্ফীতি কমানো ও রিজার্ভ বাড়াতে তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আজকের বৈঠকে। প্রথমত, বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশি মুদ্রা ক্রয়–বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করবে। এই পদ্ধতির আওতায় ডলারের মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। ক্রলিং পেগ পদ্ধতি হবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা। পুরোপুরি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর আগপর্যন্ত এই পদ্ধতি বহাল থাকবে।

দ্বিতীয়ত, নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হবে। বর্তমানে এই হার ৮ শতাংশ, যা সাড়ে ৮ শতাংশ হবে। আর তৃতীয়ত, ঋণের সুদহার নির্ধারণে বর্তমানে যে স্মার্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে, তা বাতিল হবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের চাহিদা ও সরবরাহ এবং ব্যাংক–গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদহার নির্ধারণ করবে।

এই তিন সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে এমপিসির সভায় জানানো হয়েছে।