কিছু অসৎ ব্যবসায়ী বেশি দরে তেল-চিনি বিক্রি করছেন: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও কিছু অসৎ ব্যবসায়ী বেশি দামে ভোজ্যতেল ও চিনি বিক্রি করছেন। তবে বাজার তদারকের পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘শেখ হাসিনার ভাবনায় স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪২তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ফোরামের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য মিজানুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র দিয়ে থাকে কৃষি মন্ত্রণালয়। কৃষকেরা যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সে জন্য পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে না। কৃষি মন্ত্রণালয় এ নিয়ে বাজার পর্যবেক্ষণ করছে। যদি দাম না কমে, তাহলে ভারত থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার পেঁয়াজ বেচাকেনা হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। আর চিনি বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। সেই হিসাবে, এক মাসে পেঁয়াজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আর চিনির দাম এক মাসে বেড়েছে ১৯ শতাংশ। সরকার গত সপ্তাহে চিনির খুচরা দর ঠিক করে দিয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি। এ ছাড়া সয়াবিন তেলের লিটার কেনাবেচা হয়েছে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা দরে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি চিন্তা এবং গৃহীত সব সিদ্ধান্তই স্মার্ট। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে দেশের সব নাগরিকের চিন্তাভাবনাও স্মার্ট হতে হবে।

উদাহরণ দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার মহাসংকটে টিকা কেনার জন্য অগ্রিম অর্থ দিয়ে তিনি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। খাদ্যসংকট এড়াতে এক ইঞ্চি জমিও যেন পতিত না থাকে, সে জন্য ফসল উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

টিপু মুনশি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সীমান্তবর্তী ভারতীয় ভূমিতে যদি চা চাষ হয়, আমাদের ভূমিতে তাহলে হবে না কেন? এর পর তাঁর নির্দেশে পঞ্চগড়সহ সীমান্তবর্তী এলাকায় চা চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বর্তমানে উত্তরবঙ্গে যে চা উৎপাদিত হচ্ছে, তা দেশের চাহিদার ১৫ শতাংশ পূরণ করছে এবং দিন দিন তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা তাঁর স্মার্টনেস এবং সুদূরপ্রসারী চিন্তার ফসল।’

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর রপ্তানি নিয়ে যখন সবাই দিশাহারা, তখন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এত ভেঙে পড়ার কিছু নেই। তারপর প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া পদক্ষেপের কারণে রপ্তানির ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি, বরং বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে এখন বিশ্বে দ্বিতীয়।

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে এবং এরপর ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছু চ্যালেঞ্জ আসবে—এ কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় এবং প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দিয়েছেন।