ইংল্যান্ডের অর্ধেক পরিবারের বার্ষিক আয় কমেছে ১১০ পাউন্ড

মহামারির ধাক্কায় সারা বিশ্বের মানুষের আয় কমেছে। একই সঙ্গে দারিদ্র্য বেড়েছে। বিভিন্ন জরিপে কোভিডের ধাক্কার বিভিন্ন রূপ উদ্‌ঘাটিত হচ্ছে। এবার এক জরিপে জানা গেল, যুক্তরাজ্যের অর্ধেক মানুষের আয় গড় দেড় বছরে ১১০ পাউন্ড কমেছে। অথচ একই সময়ে শীর্ষ ৫ শতাংশ ধনীর আয় উল্টো ৩ হাজার ৩০০ পাউন্ড কমেছে।

দ্য নিউ ইকোনমিকস ফাউন্ডেশনের এক জরিপে এ তথ্য মিলেছে। এ জরিপে আরও দেখা গেছে, লন্ডন শহরের মানুষের আয় যুক্তরাজ্যের উত্তরাঞ্চলের মানুষের চেয়ে ছয় গুণ বেড়েছে। ফলে যুক্তরাজ্য সরকারের ‘সমতার নীতি’ অনেকটাই হোঁচট খেয়েছে। এ নীতির উদ্দেশ্য ছিল, যুক্তরাজ্যের পিছিয়ে পড়া সমাজের জীবনমান ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা।

যুক্তরাজ্যের লেভেলিং আপ, হাউজিং অ্যান্ড কমিউনিটিস বিবিসিকে বলেছে, সমতার নীতির জন্য বরাদ্দ ৪৮০ কোটি পাউন্ডের বাইরে অবকাঠামো খাতে রেকর্ড ৯ হাজার ৬০০ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া আবাসন হাতের নাগালে নিয়ে আসার লক্ষ্যে ১ হাজার ২০০ কোটি পাউন্ড ও সবার জন্য সমতার নীতিতে ২৬০ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করা হয়েছে।

এ ছাড়া চলতি বছর ৫৬ হাজার নতুন কর্মসংস্থান করা হবে বলে জানিয়েছে তারা। এরপর যে সমতার নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশিত হবে, সেখানে মহামারি কাটিয়ে উঠতে জীবনমান ও জীবিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে নীতি প্রণীত হবে।
এ–জাতীয় অঙ্গীকারের কারণে ২০১৯ সালের নির্বাচনে ইংল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে রক্ষণশীল দল জিতেছে, যদিও এ অঞ্চলের আসনগুলো ঐতিহাসিকভাবে লেবার পার্টির দখলে থাকে।

এনএফএফের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নির্বাচনের পরবর্তী দুই বছরে লন্ডন ও পূর্ব ইংল্যান্ড ছাড়া দেশের বাকি অংশের ৫০ শতাংশ গরিব মানুষের বার্ষিক আয় ১১০ পাউন্ড কমেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় আমলে নেওয়ার পরও এটা দেখা গেছে।
এসব কারণে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আয়ের ব্যবধান বেড়েছে। লেবার পার্টির সমর্থনপুষ্ট এলাকায় এ ব্যবধান সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। আর ইংল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের খরচযোগ্য আয় বেড়েছে বার্ষিক মাত্র ২০ পাউন্ড বা শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।

আর ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মানুষের আয় বেড়েছে বছরে ৫৫০ পাউন্ড।
কোভিডের প্রভাবে সামগ্রিকভাবে ইংল্যান্ডের একক মা–বাবারা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইয়র্কশায়ার ও হাম্বারের মানুষের আয় ১৫ শতাংশ কমেছে, অর্থাৎ লন্ডনের মানুষের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মহামারির যত দীর্ঘায়ত হবে, তত মানুষ কাজ হারাবেন, তাঁদের আয় কমবে। সে জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে।