চাঁদ নিয়ে কাড়াকাড়ি বেজোস-ইলনের

জেফ বেজোস ও ইলন মাস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা আবারও চাঁদে মনুষ্যবাহী মহাকাশযান পাঠাতে চাইছে। নাসার এবারের অভিযানের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো চাঁদে প্রথম কোনো নারীকে অবতরণ করানো। তবে নাসার এ অভিযান নিয়ে দ্বন্দ্ব বেধে গেছে মার্কিন দুই ধনকুবের জেফ বেজোস ও ইলন মাস্কের মধ্যে। এমনকি নাসার বিরুদ্ধে মামলা করেছে জেফ বেজোসের মালিকানাধীন মহাকাশ সংস্থা ব্লু অরিজিন।

আর্টেমিস মুন অভিযানের লক্ষ্য হলো চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে মনুষ্যবাহী ওরিয়ন মহাকাশযান থেকে দুজন নভোচারী অবতরণ করানো। এ অভিযানের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, চাঁদে প্রথম কোনো নারীকে অবতরণ করানো। তবে নাসার এ অভিযান নিয়ে দ্বন্দ্ব বেধে গেছে মার্কিন দুই ধনকুবের জেফ বেজোস ও ইলন মাস্কের মধ্যে। এমনকি নাসার বিরুদ্ধে মামলা করেছে জেফ বেজোসের মালিকানাধীন মহাকাশ সংস্থা ব্লু অরিজিন।

মামলার পরিপ্রেক্ষিত হলো এমন, চাঁদে অবতরণের উপযোগী মহাকাশযান নির্মাণে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের সঙ্গে ২৯০ কোটি ডলারের যে চুক্তি করেছে নাসা, তাতে মৌলিক সমস্যা রয়েছে। এমনটাই অভিযোগ বিশ্বের শীর্ষ ধনী জেফ বেজোসের সংস্থা ব্লু অরিজিনের।

বিষয়টি হলো, নাসা শুরুতে চেয়েছিল দুটি সংস্থার সঙ্গেই চুক্তিতে যেতে। তবে তহবিল ঘাটতির কারণে গত এপ্রিলে দুটির পরিবর্তে একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে নাসা। আর সেটি হলো স্পেসএক্স। পরে বেজোস ১৩ আগস্ট এই চুক্তির বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন। পরে গত বৃহস্পতিবার নাসা আর্টেমিস মুন মিশনে সহযোগিতা করার জন্য স্পেসএক্সের সঙ্গে করা চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

রয়টার্স জানিয়েছে, নাসার একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে প্রথম আদালতের শুনানি ১৪ অক্টোবর হবে। এদিকে চাঁদের মডিউল তৈরির কাজের ওপর ১ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৩ আগস্ট ব্লু অরিজিন মার্কিন ফেডারেল আদালতে নাসার বিরুদ্ধে মামলা করে। নাসার ‘মূল্যায়ন’কে চ্যালেঞ্জ করে এটি ‘অবৈধ এবং অনুপযুক্ত’ বলে মামলাটি করা হয়। মামলায় বলা হয়, এপ্রিলে নাসা আর্টেমিস মুন অভিযানের ল্যান্ডার তৈরির জন্য নিলামে সর্বনিম্ন দরদাতা স্পেসএক্সের সঙ্গে ২৯০ কোটি ডলারের চুক্তি করে। এদিকে ওই নিলামে ব্লু অরিজিন এ অভিযানের জন্য ৫৯০ কোটি ডলারের প্রস্তাব জমা দিয়েছিল। অবশ্য সে সময় নাসার ব্যাখ্যা ছিল, মার্কিন কংগ্রেস তহবিল কমিয়ে দেওয়ার কারণে স্পেসএক্সকে নির্বাচন করা হয়। মার্কিন কংগ্রেসে প্রকল্পটির জন্য ৩৩০ কোটি ডলার অর্থ বরাদ্দ প্রস্তাবের মধ্যে মাত্র ৮৫ কোটি ডলার অনুমোদন করা হয়।

এদিকে ব্লু অরিজিন বলছে, নাসা স্পেসএক্সের অফার বেছে নিতে পারে, এমনটা ভেবে তারা আগেই নাসাকে প্রস্তাব দিয়েছিল যে তাদের সঙ্গে চুক্তি করলে ২০০ কোটি ডলার পর্যন্ত খরচ বহন করা হবে। তবে পরে নাসা স্পেসএক্সের সঙ্গেই চুক্তি করে আর বেজোসের অভিযোগটা এখানেই।

নাসার মুখপাত্রের বিবৃতি অনুসারে, স্পেসএক্স আদালতের কার্যক্রমের বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছে। এ ছাড়া মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা গভর্নমেন্ট অ্যাকাউন্টেবিলিটি অফিসও (জিএও) নাসার পক্ষে রয়েছে।