রাশিয়ার জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ১৪ শতাংশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বিভিন্নভাবে অনুভূত হচ্ছে। সর্বশেষ তথ্যমতে, যুদ্ধের ফলে রাশিয়ার মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্যের মধ্যে চিনির দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশের বেশি। খবর বিবিসির

এদিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রুশ মুদ্রা রুবলের দাম কমে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। রুবলের মান ইতিমধ্যে ২২ শতাংশ কমে গেছে।

বুধবার রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, এ সপ্তাহের শেষের দিকে দেশটির বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ।

চিনি সাধারণত খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ, পানীয় তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। সরকারি সংস্থার তথ্যমতে, এ সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চিনির দাম। ফেডারেল স্টেট স্ট্যাটিসটিকস সার্ভিসের তথ্যমতে, দেশটির কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে চিনির দাম ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ শতাংশ।

এরপরই আছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম গড়ে বেড়েছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ এবং নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে বেড়েছে ৪০ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে ন্যাপিজ, ব্ল্যাক টি ও টয়লেট পেপারের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৪ দশমিক ৪, ৪ ও ৩ শতাংশ।

এসপিআই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের অংশীদার ব্যবস্থাপক স্টেফেন ইনেস বিবিসিকে বলেন, রুবলের দাম কমে যাওয়ায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় অপরাধী হচ্ছে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি। রুবলের দাম কমে যাওয়ার কারণে রাশিয়াকে বেশি দামে আমদানি করতে হচ্ছে।

একাধিক পশ্চিমা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রাশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। সম্প্রতি নেস্‌লে তার প্রধান ব্র্যান্ড কিটক্যাট ও নেসকুইক রাশিয়া থেকে প্রত্যাহার করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মস্কো সুপার মার্কেটের বিক্রেতারা চিনি ও বাজরা (এক ধরনের শস্য) বিক্রির জন্য হাহাকার করছেন।

চিনি ও বাজরার মজুতে রাশিয়া স্বয়ংসম্পূর্ণ—এ কথা জানিয়ে রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ভিক্টোরিয়া আব্রামচেঙ্কো নাগরিকদের উদ্দেশে বলেন, এগুলোর জন্য আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সবার জন্য পর্যাপ্ত মজুত আছে।

বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুবলের মাধ্যমে শত্রু রাষ্ট্রের কাছে প্রাকৃতিক গ্যাস বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার গ্যাসের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তবে ইতিমধ্যে অনেক দেশ বিদ্যমান চুক্তির আলোকে ইউরোর মাধ্যমে লেনদেন করতে সম্মত হয়েছে এবং রাশিয়া এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কি না, এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।