চিপের চাহিদা নেই, স্যামসাংয়ের পরিচালন মুনাফা কমেছে ৯৫ শতাংশ

ভালো যাচ্ছে না স্যামসাংয়ের ব্যবসা
রয়টার্স

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দক্ষিণ কোরিয়ার বড় ইলেকট্রনিক কোম্পানি স্যামসাংয়ের পরিচালন মুনাফা ৯৫ শতাংশ কমেছে। অব্যাহতভাবে মেমোরি চিপের দাম ও চাহিদা কমে যাওয়ায় এমনটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। খবর সিএনএন ও সিএনবিসির।

স্যামসাং জানিয়েছে, সবশেষ জানুয়ারি-মার্চ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন মুনাফা কমে ৬৪ হাজার কোটি ওন (দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা) বা ৪৭ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলার হয়েছে। এক বছর আগের একই সময়ে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা ছিল ১৪ লাখ ১২ হাজার কোটি (১৪ দশমিক ১২ ট্রিলিয়ন) ওন। অর্থাৎ ১ বছরে পরিচালন মুনাফা কমেছে প্রায় ৯৫ শতাংশ।

এটি গত ১৪ বছরের মধ্যে যেকোনো তিন মাসের প্রান্তিকের জন্য সর্বনিম্ন পরিচালন মুনাফা। আর গত প্রান্তিকে স্যামসাংয়ের রাজস্ব ১৮ শতাংশ কমে ৬৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি (৬৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন) ওন হয়েছিল। যদিও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এপ্রিলের শুরুতেই মুনাফায় এমন ব্যাপক পতনের পূর্বাভাস দিয়েছিল স্যামসাং।

বিশ্বের বৃহত্তম মেমোরি চিপ প্রস্তুতকারী কোম্পানি স্যামসাং। ব্যক্তিগত কম্পিউটার থেকে শুরু করে স্মার্টফোন, এমনকি ডেটা সেন্টারের সার্ভারগুলোয় পর্যন্ত তাদের তৈরি চিপ ব্যবহার করা হয়।

বিশ্বব্যাপী চাহিদা কমায় বেশ কিছু ছোট ছোট চিপ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ইতিমধ্যে চিপ উৎপাদন কমিয়েছে। স্যামসাংও বলেছে যে তারা প্রতিদ্বন্দ্বী এসব ছোট কোম্পানির পথ অনুসরণ করে মেমোরি চিপ উৎপাদনে ‘অর্থপূর্ণ’ কাটছাঁট করবে। আশা করা হচ্ছে এতে চিপের দাম আবার বাড়বে।

কোভিড মহামারির সময় কম্পিউটারসহ ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতির ব্যবহার অনেকটা বেড়েছিল। তখন এসব ডিভাইসের বাড়তি চাহিদা দেখে স্মার্টফোন ও পিসি নির্মাতারা চিপের মজুত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু বর্তমানে দেশে দেশে ক্রমবর্ধমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তারা ইলেকট্রনিকস পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরূপ, স্মার্টফোন, পার্সোনাল কম্পিউটার ও সার্ভার কোম্পানিগুলো এসব পণ্য কম রাখছে। যার ফলে গত ৯ মাসে চিপের দাম প্রায় ৭০ শতাংশ কমে গেছে।

ইন্টারন্যাশনাল ডেটা করপোরেশনের তথ্যের বরাত দিয়ে সিএনবিসি বলেছে, চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ব্যক্তিগত কম্পিউটারের (পিসি) শিপমেন্ট প্রায় ২৯ শতাংশ কমেছে। এ কারণে কোম্পানিগুলো তাদের কাছে মজুত থাকা মেমোরি চিপের দাম কমিয়েছে।

বিদ্যমান অবস্থা দ্রুত পরিবর্তনের আশা স্যামসাং করছে না। কোম্পানিটি বলেছে, তারা এখন সীমিত পরিসরে চাহিদা পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশা করছে। কারণ, বড় আকারের ডেটা সেন্টারগুলো এখন পণ্য কেনায় আরও রক্ষণশীলভাবে বিনিয়োগ করছে। তবে কোম্পানিটি আশা করছে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিপের চাহিদা বাড়বে, সঙ্গে বাড়বে মুনাফাও।