রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল আমদানি বাড়াচ্ছে ভারত

রাশিয়া থেকে সমুদ্রপথে বিপুল পরিমাণ তেল রপ্তানি করা হয়ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার তেলের ওপর চলমান নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়াচ্ছে। আগামী মাস থেকে ভারতে প্রতিদিন আড়াই লাখ ব্যারেলের বেশি অপরিশোধিত মার্কিন তেল আসতে শুরু করবে। গত এক বছরে ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিদিন যে পরিমাণ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, এটা তার চেয়ে বেশি।

ভারত পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ও ভোক্তা দেশ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মস্কোর ওপর ওয়াশিংটন নতুন করে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাতে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এই আশঙ্কায় দিল্লি জ্বালানি তেল আমদানির উৎস সম্প্রসারণ করতে চায়। সাগরপথে রাশিয়া যে তেল রপ্তানি করে, তার সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত।

জাহাজের চলাচল নজরদারি করার প্রতিষ্ঠান কেপলারের তথ্য জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে তিনটি খুব বড় অপরিশোধিত তেল বহনকারী জাহাজ ও তিনটি সুয়েজম্যাক্স জাহাজ ভারতের পথে রয়েছে। জাহাজগুলো ৭৬ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল বহন করছে, যা প্রতিদিন ২ লাখ ৫৬ হাজার ব্যারেল তেলের সমপরিমাণ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান এলএসইজি থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, জাহাজ ছয়টি ভারতের পশ্চিম উপকূলের দিকে যাচ্ছে। জাহাজগুলো রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ভিটল, ইকুইনর ও সিনোকর কোম্পানি ভাড়া করেছে।

গত বছর রুশ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ভারত। রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালানো শুরু করার পর পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ মস্কোর ওপর নানা রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় রুশ তেল রপ্তানির ক্ষেত্রে। এরপর বিভিন্ন দেশ রাশিয়া থেকে তেল আমদানি থেকে সরে গেলে ভারত রুশ তেল কেনা বাড়িয়ে দেয়।

গত মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল রপ্তানির সক্ষমতা কমাতে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করে। যেসব জাহাজ রাশিয়ার তেল পরিবহন করে, যুক্তরাষ্ট্র সেই সব জাহাজর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। ওই তালিকায় এবার যোগ করা হয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রমালিকানাধীন জাহাজ কোম্পানি সোভোকমফ্লোত ও ১৪টি অপরিশোধিত তেল পরিবহনের ট্যাংকারের নাম।

ভারতের সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে, দেশটির সবচেয়ে বড় তেল পরিশোধনকারী কোম্পানি রিলায়েন্স সোভোকমফ্লোত পরিচালিত কোনো ট্যাংকারে বহনকারী রুশ তেল না কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতীয় কোম্পানিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সূত্রগুলো জানায়।

আরও কিছু ভারতীয় রিফাইনারি প্রতিষ্ঠান সোভোকমফ্লোত পরিচালিত জাহাজ ব্যবহার না করার পরিকল্পনা করছে। এটা রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানিতে প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য বিক্রিতে রাশিয়ার সামনে খুব কমই বিকল্প থাকবে বলে মনে করছে সূত্রগুলো।