মিসরে নজরদারি সরঞ্জাম বিক্রি, মার্কিন নিষিদ্ধের তালিকায় কানাডার কোম্পানি

মিসরের সরকারকে মানবাধিকারকর্মী ও রাজনীতিবিদদের নিপীড়নে সহায়তা করার অভিযোগে কানাডাভিত্তিক স্যান্ডভাইন ইনকরপোরেটেডকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে ওয়াশিংটন। গতকাল সোমবার এই পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্যান্ডভাইন একটি নেটওয়ার্কিং ইকুইপমেন্ট কোম্পানি। মিসরীয় সরকারকে প্রযুক্তি সরবরাহের জন্য মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের ‘এনটিটি লিস্টে’ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কোম্পানিটি। রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, স্যান্ডভাইনের কাছ থেকে পাওয়া প্রযুক্তি দিয়ে পাঠকের কাছে সংবাদ যাওয়া বন্ধ করার পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও মানবাধিকারকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করা হতো। সে লক্ষ্যে ইন্টারনেটে গণনজরদারি ও সেন্সরশিপে ব্যবহার করা হয়েছে এই প্রযুক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রেজিস্ট্রার থেকে এ তথ্য পেয়েছে রয়টার্স। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি জার্নাল।

অভিযোগে বলা হয়েছে, মিসরে বিরোধীদের ওপর নজরদারি সহজতর করতে স্যান্ডভাইনের ‘ডিপ প্যাকেট ইনস্পেকশন টেকনোলজি’ নামের একধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এর কাজ হলো, নেটওয়ার্ক ট্রাফিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ব্যবস্থাপনা করা। স্যান্ডভাইনকে তালিকাভুক্ত করার সঙ্গে মার্কিন কোম্পানিগুলো যেন তাকে পণ্য ও উপকরণ সরবরাহ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ চীনের চেংডু বেইঝান ইলেকট্রনিকসকেও তালিকাভুক্ত করেছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইউনিভার্সিটি অব ইলেকট্রনিক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির পক্ষে অবৈধভাবে তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রস্তুত পণ্য ও প্রযুক্তি সংগ্রহ করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এক দশকের বেশি আগে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

রয়টার্সের সংবাদে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে বলা হয়েছে, ইউনিভার্সিটি অব ইলেকট্রনিক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চায়নিজ একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিকসের (সিএইপি) ছদ্মনাম। এই প্রতিষ্ঠান চীনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সঙ্গে যুক্ত।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিবৃতিতে বলেছেন, মার্কিন প্রযুক্তি যেন মানুষের ওপর নজরদারি ও মানবাধিকারকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হবে।

স্যান্ডভাইন শুধু কানাডা নয়, একই সঙ্গে তারা ভারত, জাপান, মালয়েশিয়া, সুইডেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের তালিকায় সেগুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্যান্ডভাইন তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ওয়াশিংটনে মিসর দূতাবাস ও কায়রোয় মিসর সরকারও এ বিষয়ে রয়টার্সকে কিছু বলেনি। চেংডু বেইঝান ইলেকট্রনিকসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি রয়টার্স।

অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাজিরাহ এভিয়েশন ক্লাবকে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের তালিকা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত একটি কোম্পানির পক্ষে সরঞ্জাম কেনার অভিযোগে জাজিরাহ এভিয়েশন ক্লাবকে ২০১৮ সালে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। নানা পর্যালোচনার পর তাদেরকে তালিকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।