চীনা পণ্যে শুল্ক বাড়াতে ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাহী আদেশে সই করতে পারেন ট্রাম্প

চীন ও যুক্তরাষ্ট্ররয়টার্স

সোমবার শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৬টি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। যদিও বাণিজ্যসংক্রান্ত যেসব বিষয়ে তিনি নির্বাহী আদেশ দেবেন বলে অঙ্গীকার করেছিলেন, সেসব বিষয়ে তিনি এখনো হাত দেননি।

এর অর্থ এই নয়, ট্রাম্প বিষয়গুলো ভুলে গেছেন। প্রথম দিনই তিনি বলেছেন, কানাডার পণ্যে শুল্ক আরোপের নির্বাহী আদেশে হয়তো ১ ফেব্রুয়ারিতেই সই করবেন। এরপর তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, চীনের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার বিষয়টি তিনি বিবেচনা করছেন এবং সেটাও আগামী ১ ফেব্রুয়ারি তিনি সই করতে পারেন। খবর বিবিসির।

কানাডা ও মেক্সিকোতে ব্যথানাশক ওষুধ ফেনটানিল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। এই আলোচনার সূত্রেই ট্রাম্প মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। এই দেশ দুটির বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, সেখান থেকে অবৈধভাবে অভিবাসী ও ওষুধ আসছে যুক্তরাষ্ট্রে।

মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও ছেড়ে কথা বলেননি। তাঁর অঙ্গীকার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যেও শুল্ক আরোপ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের অভিযোগ, চীন বিশ্ববাণিজ্যের নিয়মের অপব্যবহার করছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কে তিনি বলেছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করছে। এ কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যেও শুল্ক আরোপ করা হবে এবং ট্রাম্প মনে করেন, এভাবেই ইটের জবাবে পাটকেল দেওয়া যায় এবং একমাত্র এর মাধ্যমে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

সোমবার শপথ নেওয়ার পর ২৬টি নির্বাহী আদেশে সই করার পাশাপাশি প্রশাসনকে ট্রাম্প নির্দেশ দিয়েছেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের যত চুক্তি আছে, সেগুলো খতিয়ে দেখার এবং কোন কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যায্য বাণিজ্য আচরণ করছে, তা অনুসন্ধান করার।

এদিকে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের চলমান বার্ষিক সম্মেলনে চীনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষাবাদী নীতির সমালোচনা করেছেন। চীনের সহকারী প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েজিয়ান যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করেই বলেছেন, এমন বন্দোবস্ত হওয়া উচিত, যেখানে সবারই সুবিধা হবে।

২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনের আগে প্রচারণা পর্বে ডোনাল্ড ট্রাম্প সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন শুল্ক নিয়ে। চীনের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা, এমনকি তিনি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের অঙ্গীকার করেছিলেন। প্রতিবেশী মেক্সিকো ও কানাডাকেও তিনি ছাড় দেননি।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করলে কানাডাও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। এখন তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ তিন বাণিজ্য অংশীদার হচ্ছে কানাডা, চীন ও মেক্সিকো।

সামগ্রিকভাবে মার্কিন অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থায় আছে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা। বাস্তবতা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের হার এখন মাত্র ৪ দশমিক ১ শতাংশ। এর আগে কোনো প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা গ্রহণের সময় বেকারত্বের হার এর চেয়ে কম ছিল, এমন প্রেসিডেন্ট ছিলেন মাত্র দুজন—২০০১ সালে জর্জ ডব্লিউ বুশ ও ১৯৬৯ সালে রিচার্ড নিক্সন।

উল্টো ট্রাম্পের নীতির কারণে মার্কিন অর্থনীতি টালমাটাল হতে পারে বলে সিএনএনের এক সংবাদে বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতিতে বলা হয়েছে।