উৎপাদন কমেছে যুক্তরাজ্যের কারখানায়, নীতি সুদহার বৃদ্ধির প্রভাব

যুক্তরাজ্যে কারখানার উৎপাদন কমেছে
রয়টার্স

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের কারখানাগুলোর উৎপাদন তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদহার বৃদ্ধি। সুদহার বৃদ্ধির কারণে দেশটির অর্থনীতিতে মন্থরগতি দেখা যাচ্ছে, যার জেরে কমছে কারখানার উৎপাদন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি বা সিবিআইয়ের মাসিক উৎপাদনের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের কোভিডজনিত লকডাউন থেকে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের পর দেশটির কারখানাগুলোর উত্পাদন এখন সবচেয়ে কম।

দেশটির নিয়োগদাতাদের সংগঠনের সদস্যরা বলছেন, জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসে অর্থনীতিতে ধীরগতি দেখে তাঁরা বেশ বিস্মিত। বেশির ভাগ সংস্থা যেখানে ধারণা করেছিল, উৎপাদনের হার ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, সেখানে কারখানাগুলোর উৎপাদন কমেছে ৩৬ শতাংশ।

সিবিআই বলেছে, গত তিন মাসে ১৫ থেকে ১৭টি উপখাতে উৎপাদন কমেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে উৎপাদন কমেছে মোটরযান, পরিবহন সরঞ্জাম, যন্ত্র প্রকৌশল, কাগজ, মুদ্রণ, মিডিয়া ও রাসায়নিক শিল্পে।

২৭৭টি উৎপাদন প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, রপ্তানি ও স্থানীয় চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কম, যদিও মূল্যবৃদ্ধির চাপ কিছুটা কমেছে। সিবিআই বলেছে, ভবিষ্যতে বিক্রয়মূল্য বৃদ্ধি করবে, এমন পরিকল্পনা আছে যেসব কোম্পানির, সেই সংখ্যা ২০২১ সালের চেয়ে কম।

যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জুলাই ও আগস্টের সমীক্ষার ভিত্তিতে নীতি সুদহার বাড়িয়ে ৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ করেছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের পর এ নিয়ে ১৪ বার সুদহার বাড়িয়েছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো ব্যাংক অব ইংল্যান্ডও এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

সিবিআইয়ের অর্থনীতিবিদ মার্টিন সার্টোরিয়াস বলেছেন, করোনা মহামারির পর এই প্রথম উৎপাদনের পরিমাণ ও চাহিদা কমেছে, সমীক্ষায় এ ধরনের ফলাফল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বেশ চিন্তার কারণ। তবে দামের চাপ কমায় অনেক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও বৃহত্তর অর্থনীতিতে কিছুটা স্বস্তি আসবে।

মার্টিন সার্টোরিয়াস আরও বলেন, উৎপাদনের দুর্বলতা দীর্ঘ মেয়াদে দূর করতে উৎপাদনের হার দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে যুক্তরাজ্য সরকারের উচিত, উৎপাদনকারীদের পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগে উৎসাহিত করা এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রচেষ্টায় প্রণোদনা দেওয়া।