বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে গড়পড়তা দরপতন

বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে আজ সোমবার শেয়ারসূচকে গড়পড়তা পতন ঘটেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল ঊর্ধ্বমুখী দ্রব্যমূল্য মোকাবিলায় নীতি-নির্ধারণী সুদের হার বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেওয়ায় বিশ্বের বড় বাজারগুলোতে শেয়ারের দাম কমেছে।

জেরোম পাওয়েল তাঁর বক্তব্যে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন যে ফেডারেল রিজার্ভের নীতি ‌‘পরিবার ও ব্যবসার জন্য কিছু সমস্যা তৈরি করবে।’

এদিকে সুদের হার বাড়ানো হলে তাতে ব্যক্তি ও কোম্পানির নেওয়া ঋণের ব্যয় বেড়ে যাবে। অর্থাৎ তাদের জন্য ঋণ অধিকতর ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে। এতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি কমতে পারে।

আজ সোমবার এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় ধনী দেশ জাপানের প্রধান শেয়ারবাজার টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক নিক্কেই ২২৫ সূচক কমেছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ও অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ সূচক প্রায় ২ শতাংশ করে কমেছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক পড়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে ডাওজোন্স সূচক ১ হাজার ৮ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশেরও বেশি কমেছে। এ ছাড়া এস অ্যান্ড পি ৫০০ ও নাসড্যাক সূচক যথাক্রমে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ ও ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। এটি হচ্ছে গত জুনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এসব সূচকের জন্য সবচেয়ে খারাপ দিন।

ইউরোপের বড় বড় শেয়ারবাজারের মধ্যে আজ যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসের এইএক্স সূচক শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ, ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক ১ শতাংশ, জার্মানির ড্যাক্স সূচক শূন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ইউরো স্টকস সূচক শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ কমেছে।

অবশ্য এশিয়ার শেয়ারবাজারে হঠাৎ করেই সূচকের পতন ঘটেনি। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জেরোম পাওয়েলের মন্তব্যের পরই গত সপ্তাহের শেষ লেনদেন দিবস শুক্রবার নিউইয়র্কের প্রতিটি প্রধান শেয়ারসূচকে ৩ শতাংশেরও বেশি পতনের জেরে নতুন সপ্তাহের শুরুতে এশিয়ার শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দেয়।

পাওয়েল সুদের হার বাড়ানো হবে বলে সতর্ক করে দেওয়ার পরই মার্কিন শেয়ারবাজারে সূচকের পতন ঘটে। জ্যাকসন হলে এক সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি জানান, ফেডারেল রিজার্ভ আগামী কয়েক মাস নীতিনির্ধারণী সুদের হার বাড়াবে এবং তা ‘কিছুদিন উচ্চ পর্যায়েই’ রাখতে হতে পারে।

জেরোম পাওয়েল বলেন, সুদের হার বৃদ্ধি যদিও আমেরিকান পরিবার ও ব্যবসার জন্য ব্যয়বহুল হবে, কিন্তু ‘দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হলে সেটি এর চেয়ে অনেক বেশি যন্ত্রণার হবে।’

বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রে এখন চার দশকের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। সূত্র: বিবিসি, সিএনবিসি।