এবার চীনে বিনিয়োগের আরও পথ খুঁজছে সৌদি আরামকো

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল কোম্পানি আরামকোছবি: রয়টার্স

চীনে আরও বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছে সৌদি আরবের তেল কোম্পানি আরামকো। কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিন নাসের গত রোববার বলেছেন, চীনে তেলের চাহিদা চাঙা রয়েছে এবং এই চাহিদা বাড়ছে। আর সে কারণে তারা দেশটিতে বিনিয়োগের নতুন সুযোগ খুঁজছেন।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো চীনে তেল পরিশোধন ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে; এ লক্ষ্যে তারা বেশ কিছু চুক্তি করে ফেলেছে। এর মধ্যে অপরিশোধিত তেল কেনাবেচার চুক্তিও আছে।

এদিকে গত বছর তেলের দাম কম থাকার কারণে সৌদি আরামকোর মুনাফা ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ১২ হাজার ১৩০ ডলারে নেমে এসেছে। গত রোববার এই পরিসংখ্যান প্রকাশের পর গণমাধ্যমকে আমিন নাসের বলেন, এখন কেবল নতুন বছরের শুরু; চীনে এখন চাহিদা বেশ চাঙা; বেশ দ্রুতগতিতে তা বাড়ছে বলেও দেখা যাচ্ছে।

নাসেরের প্রত্যাশা, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক তেলের বাজার বেশ চাঙা থাকবে। তাঁর ধারণা, এ বছর তেলের উৎপাদন দৈনিক ১৫ লাখ ব্যারেল বাড়বে। তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক তেলের চাহিদা দৈনিক ১০ কোটি ৪০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হতে পারে; ২০২৩ সালে যা ছিল ১০ কোটি ২৪ লাখ ব্যারেল।

এদিকে সৌদি সরকার গত জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে আরামকোকে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে উৎপাদন সক্ষমতা দৈনিক ১ কোটি ৩০ লাখ ব্যারেলে উন্নীত করার নির্দেশ দিয়েছে।

ফলে সাফানিয়া ও মানিফা অঞ্চলে আরামকোর যে সম্প্রসারণ পরিকল্পনা ছিল, সে পরিকল্পনা দুটি স্থগিত করা হয়েছে। যদিও তাদের বাকি তিনটি প্রকল্প পরিকল্পনামাফিক চলছে। জুলুফ, মারজান ও বেরি অঞ্চলের প্রকল্প থেকে দৈনিক যথাক্রমে ছয় লাখ, তিন লাখ ও আড়াই লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদিত হতে পারে।

তবে আমিন নাসের বলেছেন, নতুন প্রকল্প উৎপাদনে এলেও দৈনিক তেল উৎপাদন সক্ষমতা ১ কোটি ২০ লাখ ব্যারেলের মধ্যে রাখা হবে। নানা কায়দা করে উৎপাদনের এই লক্ষ্যমাত্রা বজায় রাখা হবে, যদিও এতে সক্রিয় রিগের সংখ্যা কমানো হবে না।

এ ছাড়া আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি আরামকো গ্যাস উৎপাদন ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে। এ লক্ষ্যে তারা মার্কিন কোম্পানি মিডওশান এনার্জির সঙ্গে অংশীদারত্বে যেতে পারে। মিডওশানের কিছু শেয়ার কেনার বিষয়েও গত বছর কোম্পানিটি কৌশলগত লক্ষ্য নির্ধারণ করে। আরামকো মূলত অস্ট্রেলিয়ার মিডওশানের সঙ্গে অংশীদারি করছে। লক্ষ্য হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার বাইরে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনে বিনিয়োগ করা।

এদিকে অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করার অংশ হিসেবে এবার লিথিয়াম উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে সৌদি আরামকো। এতে বোঝা যাচ্ছে, তেল কোম্পানিগুলোর নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে নতুন বিনিয়োগে যাবে। বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি তৈরিতে লিথিয়াম ব্যবহার হয়।